পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নবধর্ম্মের প্রচার ও ব্যাপ্তি

প্রবৃত্ত হয়, তখনও সে মধ্যে মধ্যে দুর্ব্বল হইয়া পড়ে, তখনও তাহার সত্যপথ হইতে ভ্রষ্ট হইবার আশঙ্কা থাকে; তজ্জন্য তোমরা পরস্পরের সহায় হইও, সহানুভূতি দ্বারা একে অন্যের সাধু চেষ্টার আনুকূল্য করিও। তোমাদের ভ্রাতৃবন্ধন পবিত্র হউক, তোমাদের এই “সংঘ” শ্রদ্ধাবানদিগের মিলনভূমি হউক।”

 এই সময়ে একদিন যশনামক কাশীধামের এক ধনবান বণিকের পুত্র সংসারে বীতরাগ হইয়া গোপনে রাত্রিকালে পিতৃগৃহ হইতে পলায়ন করেন। ঋষিপত্তনে যেখানে ভগবান্‌ বুদ্ধদেব বাস করিতে ছিলেন যুবক তাহারই সন্নিকটে আগমন করিয়া বলিয়া উঠিলেন— “অহো, কি উপদ্রব! কি উপসর্গ!” বুদ্ধ স্নেহকণ্ঠে কহিলেন, এখানে উপদ্রব নাই, কোন উপসর্গ নাই। তুমি আমার নিকটে আইস, আমি তোমাকে ধর্ম্মশিক্ষা দিব। যুবক বুদ্ধের সমীপে গমন করিয়া উপবেশন করিলেন, বুদ্ধ তাঁহাকে দুঃখনিবৃত্তির মঙ্গলবাণী শুনাইলেন। যশের জ্ঞাননেত্র প্রস্ফুটিত হইল; তিনি গভীর সান্ত্ববনা লাভ করিয়া বুদ্ধের চরণে আপনাকে সমর্পণ করিলেন।

 ধনীর পুত্র যশ মূল্যবান্‌ নানা অলঙ্কারে বিভূষিত ছিলেন বলিয়া লজ্জা অনুভব করিতেছিলেন। বুদ্ধ বলিলেন—”বৎস, ধর্ম্ম বাহিরের ব্যাপার নহে, ইহা মন হইতে উৎপন্ন হয়। মহামূল্য পরিচ্ছদে ভূষিত ব্যক্তিও আপনার প্রবৃত্তিগুলি জয় করিতে পারেন; আবার গৈরিকধারী শ্রমণের চিত্তও সাংসারিক ভোগবিলাসের মধ্যে নিমগ্ন থাকিতে পারে। সন্ন্যাসী ও গৃহী এই দুইয়ের মধ্যে কোন প্রভেদ নাই। যিনি আপনার অহংবোধকে নির্বাসিত করিতে পারেন, তিনিই কল্যাণময় সত্য লাভ করিয়া থাকেন।”

৩৭