পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
অন্তিম জীবন

দেহহীন মন শান্তির মধ্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করে, কারণ তাঁহারা আপনাদের সুকর্ম্মের ফলে কল্যাণ ও আনন্দই প্রাপ্ত হইয়া থাকেন!”

 পাটলিগ্রাম হইতে বুদ্ধ কোটীগ্রামে গমন করেন এবং পথিমধ্যে অপর একটি স্থানে বিশ্রাম করিয়া বৈশালীতে উপস্থিত হন। এখানে আম্রপালী নামক জনৈক বারাঙ্গনার কাননে তিনি সশিষ্য আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। আম্রপালী প্রসন্নমনে মহাপুরুষ বুদ্ধের সমীপে গমন করিয়া পরদিন তাঁহাকে আপন ভবনে আহারের নিমন্ত্রণ করিলেন। সাধারণের চক্ষে আম্রপালী পতিত নারী বলিয়া ঘৃণিত হইলেও মহাপুরুষের উদার হৃদয় তাঁহাকে ঘৃণা করিল না, তিনি তাহার নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিয়া লইলেন। লিচ্ছবিবংশীয় রাজারা বুদ্ধের আগমনসংবাদ পাইয়া আড়ম্বরসহকারে তাঁহার সহিত দেখা করিতে আসিলেন। তাঁহারাও পরদিন বুদ্ধকে রাজভবনে আহারার্থ নিমন্ত্রণ করিলেন, বুদ্ধ তাহাদিগকে জানাইলেন যে, তিনি ইহার পূর্ব্বেই আম্রপালীর নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিয়াছেন। রাজন্যগণ এই সংবাদে সন্তুষ্ট হইলেন না, তাঁহাদের আহ্বান অস্বীকার করিয়া বুদ্ধ পতিতা নারীর গৃহে আহার করিতে যাইবেন, শুনিয়া তাঁহারা বিষণ্ণ হইলেন। পরদিন যথাসময়ে বুদ্ধ সশিষ্য আম্রপালীর অন্ন অকুণ্ঠিতচিত্তে গ্রহণ করিলেন। তাঁহার মুক্তির বাণী পতিতা নারীর প্রসুপ্ত বোধি জাগরিত করিল! আম্রপালীর জীবনের গতি কল্যাণের দিকে প্রধাবিত হইল। তাহার উদ্যান-ভবন ভিক্ষু ও সাধুদের বাসের জন্য দান করিয়া সে আপনাকে কৃতার্থ মনে করিল।

 বুদ্ধ এখন অশীতি বর্ষে পাদর্পণ করিয়াছেন; বার্দ্ধক্য তাঁহার

৫৫