মুখবন্ধ মহারাজ অনন্তদেবের কাশ্মীবরাজ্য শাসনকালের পূর্বে মহাকবি ক্ষেমেন্দ্র কাশ্মীরদেশে জন্ম গ্রহণ করেন। তদীয় পুত্র সোমেন্দ্র পিতৃকৃত কল্পলতা গ্রন্থের উপক্ৰমণিকায় লিখিয়াছেন দে, মহারাজ অনন্তদেবের রাজ্যকালের সপ্তবিংশ সংবৎসরে ( খৃ ১০৩৫ ) কল্পলতাগ্রন্থ সমাপ্ত হইয়াছে । এক্ষণে রাজতরঙ্গিণী অনুসারে জন যাইতেছে মে, ੇਸ਼ দশম শতাব্দীর শেষে ও একাদশ শতাব্দীর প্রথমাংশে ক্ষুেমেন্দ্র বিদ্যমান ছিলেন । ক্ষেমেন্দ্র তদনীন্তন সময়ে একজন বিখ্যাত কবি বলিয় পরিচিত ছিলেন । ইহার রচিত অনেকগুলি গ্রন্থ দেখিতে পাওয়া যায় । তন্মধ্যে ভারতমঞ্জরী ও বোধিসত্ত্বাবদানকল্পলতা এই দুইটা বৃহদাকার । ক্ষেমেন্দ্রকৃত কয়েকখানি উপাদেয় গ্রন্থ কাব্যমালার মধ্যে মুদ্রি ত হইয়াছে এবং চারুচৰ্য্যাশতক নামে একখানি গ্রন্থ বঙ্গানুবাদ সহ আমি প্রকাশ করিয়াfছ । বোধিসত্ত্বাবদানব ললতাগ্রন্থে বৌদ্ধধৰ্ম্মের সারমৰ্ম্ম অতি সুললিত গল্পচ্ছলে অভিহিত হইয়াছে । মৈত্রী, করুণা, মুদিত ও উপেক্ষ এই চারিটি বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রধান চিত্তবৃত্তির বিষয় বিশদভাবে এই গ্রন্থে প্রকটি ত হইয়াছে। এই গ্রন্থে ১০৮টা পল্লব অর্থাৎ অধ্যায় আছে, তন্মধ্যে শেষ অধ্যায় ক্ষেমেন্দ্রের স্থযোগ্য পুত্র সোমেন্দ্র রচনা করিয়াছেন । কল্পলতাগ্রন্থের ভাষার লালিত্য ও মাধুৰ্য্য কালিদাসের তুল্যই বলা যায় । তাহার কিছু নিদর্শনস্বরূপ প্রত্যেক পল্লবেরই প্রথম শ্লোক ইহাতে সন্নিবিষ্ট করিয়াছি । ইহা দ্বারা পাঠকগণ মহাকবির কবিত্বের পরিচয় কতকটা পাইবেন ।