স্কন্ধের উপর আরােহণ করিয়া আমারি শাখাচ্ছেদন করিয়াছ, এক্ষণে কে কাহার বিচার করিবে?”
মানব আরক্তলোচনে কহিল, “আমার কয়েকজন কাঠুরিয়া যে অকালে কালগ্রাসে পতিত হইল, তাহার জন্য কেহই দণ্ড পাইবে না, এ কখনো হইতে পারে না।”
বনস্পতি ভীত হইয়া কম্পিত মর্ম্মর স্বরে কহিল, “প্রভু, তাঁহারা সুবুদ্ধি সহকারে মানব চাতুরী অবলম্বন করিয়া যেরূপ কাণ্ড করিয়াছিলেন, আশ্চর্য্য কার্য্যনৈপুণ্যবশত অবিলম্বেই তাহার ফললাভ করিয়াছেন, আমি মূঢ় বৃক্ষ, তাহার প্রতিবিধান করি এমন সাধ্য ছিল না।”
মানব কহিল, “কিন্তু তােমারি শাখা ভাঙিয়া পড়িয়াছিল, তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই।”
বনস্পতি কহিল, “সে কথা যথার্থ, কারণ আমারি শাখায় তাঁহারা কুঠারাঘাত করিয়াছিলেন এবং প্রকৃতির নিয়ম অনিবার্য্য।”
মানব সুযুক্তি সহকারে কহিল, “অতএব তােমাকেই দণ্ড স্বীকার করিতে হইবে। তােমার যাহা কিছু বক্তব্য আছে বলিতে থাকো আমি এক্ষণে কুঠারে শাণ দিতে চলিলাম।”
তাৎপর্য্য।—অনবধানবশত যদি হুঁচট খাইয়া থাক, চৌকাঠকে পদাঘাত করিবে। সেই জড় পদার্থের পক্ষে এই একমাত্র সুবিচার।
১২৯৮।