পাতা:ব্রাহ্মণ-রোমান-ক্যাথলিক-সংবাদ - দোম আন্তোনিও দো রোজারিও.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রস্তাবনা
২৷৶৹

দোম আন্তোনিয়ো রোজারিওই বাঙ্গালী এবং এভোরার পুথিই বাঙ্গালীর লেখা বাঙ্গালা গল্পের প্রাচীনতম নিদর্শন।[১]

 এইবার এভোরার পুথির কথা আলোচনা করা যাক। ফুলস্ক্যাপের ৮ পেজী খাতায় দুই কলমে বইখানা লেখা, শিরোনামা ও প্রস্তাবনা ভিন্ন। এই দুইটি পৃষ্ঠা পর্ত্তুগীজ ভাষায় লেখা। প্রত্যেক পৃষ্ঠার বাম দিকে মূল বাঙ্গালা রোমান হরফে লেখা, আর ডান দিকে পর্ত্তুগীজ ভাষায় ঠিক অনুবাদ নহে, সার মর্ম্ম। সুতরাং ফাদার আন্তোনিয়ো ভাওয়ালের নাগরী পল্লীতে যে পুথি দেখিয়াছিলেন, সে পুথি এভোরায় যায় নাই। এভোরার পুথিতে বাঙ্গালা অক্ষর একেবারেই নাই। অথচ ফাদার আম্ব্রোসিয়ো বলিতেছেন যে নাগরীর পুথির এক দিকে বাঙ্গালা হরফে লেখা ছিল।

 এইবার এভোরার পুথিতে অনুসৃত অনুলিখন-প্রণালী-সম্বন্ধে দুই-একটি কথা বলা প্রয়োজন। ক্রেপার শাস্ত্রের অর্থভেদ এবং শব্দকোষের অনুলিখন-প্রণালীর সহিত এভোরার পুথির অনুলিখন-প্রণালীর বিশেষ অনৈক্য আছে বলিয়া মনে হয় না। অধ্যাপক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয় তৎসম্পাদিত আসুম্পসাঁওর ব্যাকরণ ও শব্দকোষের প্রবেশিকায় বিশেষ পাণ্ডিত্য-সহকারে পর্ত্তুগীজ অক্ষরের উচ্চারণ-রীতি আলোচনা করিয়া রোমান হরফের সাহায্যে বাঙ্গালা শব্দ লিখিবার নিয়ম পর্য্যালোচনা করিয়াছেন। তাঁহার মতে রোমান হরফে বাঙ্গালা লিখিবার সময় পর্ত্তুগীজ পাদ্রীরা একটি নির্দ্দিষ্ট নিয়ম মানিয়া চলিতেন। আজকাল যেমন নানারূপ সাঙ্কেতিক চিহ্ন-দ্বারা রোমান হরফের সাহায্যে প্রাচ্য ভাষা-সমূহের বিভিন্ন ধ্বনি নির্দ্দেশ করিবার নিয়ম বাহির হইয়াছে, সেকালে তাহা হয় নাই। তখন মাত্র অল্প কয়েকজন পাদ্রী নিজেদের প্রয়োজন- ও সুবিধা-অনুসারে প্রাদেশিক ভাষার চর্চ্চা করিতেন। তাঁহাদের মধ্যে আবার দুই-তিনজন ব্যতীত আর কেহ আলোচ্য ভাষায় গ্রন্থ রচনা করিবার ক্লেশ স্বীকার করেন নাই। ইঁহারা অনুলিখনের সময় কোন বাঁধাধরা নিয়ম প্রতিপালন করিয়াছেন বলিয়া মনে হয় না। অবশ্য ত্রস্ততার জন্য বানানের ব্যতিক্রম যে হয় নাই, তাহা বলা যায় না। প্রথম পৃষ্ঠার তৃতীয় রেখার bhoso (ভজো) এবং bhusi (ভজি) এই প্রকারের ব্যতিক্রম দৃষ্টি হয়। probe ও prubei (পৃঃ ৬), iccha এবং ichae প্রভৃতিতে লিখিবার তাড়াতাড়িতে

  1. কেহ কেহ শূন্য পুরাণের অংশবিশেষকে প্রাচীন গদ্য বলিয়া মনে করেন; কিন্তু শূন্য পুরাণে প্রকৃত গদ্য আছে বলিয়া মনে হয় না।