পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অতিনাথ ন্যায়রত্ন তিনি যে ভাবে তাহার মত ব্যক্ত করিয়াছেন তাহা হইতে তাহাকে আদর্শ কুতার্কিক (sophist) বল। যাইতে পারে। এই মতানুসারে দান যজ্ঞ হবন প্রভৃতি অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ নিরর্থক ; সুকৃত-দুষ্কৃত কর্মের অতিপ্রাকৃত ফল কাল্পনিক ; ইহলােক-পরলােকের অস্তিত্ব নাই ; পিতামাতা বলিয়া কিছু নাই—কিন্তু জীব স্বয়ং উৎপন্ন নহে । চরম জ্ঞানের অধিকারী এবং তথাকথিত ইহলােকপরলােক সংক্রান্ত অভিজ্ঞ কোনও শ্রমণ বা ব্রাহ্মণ নাই যিনি এই জ্ঞান বিতরণ করিতে পারেন। চতুভূতের উপাদানে জীব-শরীর গঠিত- মৃত্যুর পর তাহার পাথিব অংশ পৃথিবীতে, জলীয় অংশ জলে, বায়বীয় অংশ বায়ুতে এবং তেজোময় অংশ অগ্নিতে প্রত্যাবর্তন করে ও বিলীন হয় ; তাহার ইন্দ্রিয়নিচয় বিলীন হয় আকাশে। শ্মশানভূমিতে বহন করা পর্যন্তই শববাহকের। তাহার গুণকীর্তন করে, কিন্তু তাহার অস্থিসমুহ ভস্মীভূত হইবামাত্র তাহার যজ্ঞ ও দানাদি কর্মের শেষ হয়। মূর্খ ও জ্ঞানী উভয়েরই দেহাবসানে পরম পরিসমাপ্তি ঘটে—মৃত্যুর পর তাহাদের আর কোনও সত্তা থাকে না। এই প্রসঙ্গে গুণনাম। আজীবিকের মতবাদ দ্রষ্টব্য (Fausboll, Jataka, vol. 6; মহানারদ কসসপ জাতক ৫৪৪, পৃ ২২৫)। o T. W. Rhys Davids, Dialogues of the Buddha ; H. G. Jacobi, Jaina Sutras II. XXIV, ( Sutrakritanga ); B. M, Barua, A History of Pre-Buddhistic Indian Philosophy, Calcutta 1921 ; G. P, Malalasekera : Dictionary of Pali Proper Numes, London, 1937-38 ; A. L. Basham, History and Doctrines of the Ajivikas, London, 1951. দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় অজিতনাথ স্যায়রত্ন (১৮৩৯-১৯২০ খ্রী) সুরসিক ও কবি হিসাবে প্রসিদ্ধ। তিনি নবদ্বীপের অধিবাসী ছিলেন। ১৯১৬ খ্রীষ্টাব্দে মহামহােপাধ্যায় উপাধি লাভ করেন। তাহার রচিত গ্রন্থের মধ্যে কৃষ্ণানন্দ বাচস্পতি রচিত অন্তর্ব্যাকরণ নাট্য-পরিশিষ্টের টীকা, কাশীখণ্ডের বাংলা অনুবাদ, বকদূত, চৈতন্যশতক প্রভৃতি উল্লেখযােগ্য। | পারিপার্শ্বিক বিষয়বস্তু অবলম্বনে দ্রুত কবিতা রচনায় তাহার বিশেষ দক্ষতা ছিল। ভ্র কান্তিচন্দ্র রাঢ়ী, নবদ্বীপ মহিমা, দ্বিতীয় সংস্করণ ১৩৪৪ বঙ্গাব্দ। চিন্তাহরণ চক্রবর্তী

________________

অজ্ঞাবাদ অজিত সিংহ ( রাঠোর) যােধপুরের রাজা যশােবন্ত সিংহের পুত্র। পিতার মৃত্যুর (১০ ডিসেম্বর, ১৬৭৮ খ্ৰী ) পর ১৬৭৯ খ্ৰী, ফেব্রুয়ারি অজিত সিংহ জন্মগ্রহণ করেন। যােধপুরের রানারূপে মনােনয়নলাভের জন্য তাহাকে | দিল্লীতে ঔরঙ্গজেবের নিকট লইয়া যাওয়া হয়। কিন্তু সম্রাট ইতঃপূর্বে ছত্রিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ইন্দ্র সিংহ রাঠোর নামে যশােবস্তের এক ভ্রাতুষ্পপুত্রকে যােধপুরের রানা রূপে স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন। অজিত সিংহ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিলে তাহাকে সিংহাসন প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হইল ; অন্যথায় সম্রাট তাহাকে আপন হারেমে পালনের সংকল্প করিলেন। এই প্রস্তাবে রাঠোরেরা অত্যন্ত অপমানিত বােধ করিল। যশােবন্তের মন্ত্রীপুত্র দুর্গাদাস রাঠোর অপরিসীম বীরত্ব ও কৌশলের সাহায্যে অজিত সিংহকে দিল্লী হইতে উদ্ধার করিয়া যােধপুরে লইয়া গেলেন। ঔরঙ্গজেব শাহজাদা আজম, মুয়াজ্জম ও | আকবরের সহিত যােধপুরের বিরুদ্ধে সসৈন্যে অগ্রসর হইলেন। যােধপুর অধিকৃত ও লুণ্ঠিত হইল। কিন্তু মেবারের শিশদীয় বংশীয় রানা রাজসিংহ অজিত সিংহের পক্ষে যােগ দিলেন। ঔরঙ্গজেবের জীবদ্দশায় এই যুদ্ধের মীমাংসা হয় নাই। তাহার মৃত্যুর পর ত্রিশবর্ষব্যাপী যুদ্ধের পর ১৭০৯ খ্ৰীষ্টাব্দে সম্রাট প্রথম বাহাদুর শাহ, অজিত সিংহকে রানা রূপে স্বীকার করিয়া লন।। বাহাদুর শাহের মৃত্যুর পর অজিত সিংহ মােগল | সাম্রাজ্য আক্রমণ করেন এবং ১৭১৪ খ্রীষ্টাব্দে স্বীয় কন্যাকে মোগল সম্রাটের সহিত বিবাহ দিয়া সুন্ধি করেন। অজিত সিংহ ১৭২১ খ্ৰীষ্টাব্দ পর্যন্ত আজমীর ও গুজরাটের শাসনকর্তা-পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। পরে মারাঠাদের সহিত সহযােগিতার অভিযােগে তঁহাকে গুজরাটের শাসনকর্তার পদ হইতে অপসারিত করা হয়। স্বীয় পুত্র ভক্তসিংহের দ্বারা তিনি নিহত হন। সৌরীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য

অজ্ঞাবাদ (agnosticism) একটি দার্শনিক মতবাদ। ইহার অর্থ এই যে, অতীন্দ্রিয় সত্তা (যথা আত্মা ঈশ্বর ইত্যাদি) সম্বন্ধে কোনও জ্ঞানলাভ আমাদের পক্ষে সম্ভব নহে। তথাকথিত অতীন্দ্রিয় তত্ত্বগুলি বাস্তবিক আছে কি নাই, অজ্ঞাবাদী সে বিষয়ে কিছুই বলিতে চাহেন না। কারণ তাহার মতে এ বিষয়ে কোনও জ্ঞানই তাহার হয় নাই এবং হইতে পারে না। অজ্ঞাবাদী অবশ্য এ কথা বলেন না যে আত্মা নাই বা ঈশ্বর নাই। অতীন্দ্রিয় তত্বসমূহের অস্তিত্ব সরাসরি অস্বীকার করেন জড়বাদী ও

৩২