পাতা:ভারতীয় স্মৃতি কথা ও চিত্র - সমরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মণ.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

No I বল্লভণী গড় মন্দির অবস্থিত। মন্দির ও পর্বতমালা সহিত এই জলাশয়ের সমগ্র দৃশ্য অতিশয় মনোরম ৷ এতদ্ভিন্ন এই প্রদেশস্থ প্রাচীন মন্দির ও নিকেতনাদি সমস্তই প্রস্তরনিৰ্ম্মিত বলিয়া সমধিক সুদৃশ্ব এবং ইহার অধিকাংশই পুরাতন রাজগণের প্রতিষ্ঠিত । এই স্থানে এই সমুদয় হিন্দু মন্দির ও গৃহাদি ব্যতিরেকে মুসলমানগণের কোন কীর্তিচিহ্ন পরিদৃষ্ট হইল না । বরুণী গড় হইতে নূ্যনাধিক এক ক্রোশ দূরবর্তী অরণ্যাকীর্ণ জনমানবহীন বরুণী পৰ্ব্বতের এক অংশে যে একটা মন্দির আছে, তন্মধ্যে এক প্রস্তরাসনোপরি “বরুণী” ও “করুণী” ঠাকুরাণী নামক দুইখানি পৃথকৃ প্রস্তর ফলকে খোদিত মূৰ্ত্তি স্থাপিত আছে। স্থানীয় লোকে মূৰ্ত্তি ছুইখানিকে দুই ভগিনী কহে, এবং দুইটাই একত্রে পূজিত হয়। এই স্থানে পশুবলি হইয়া থাকে, পূজকের শাক্তমতাবলম্বী। উক্ত দেবীপূজকদিগের নিকট জ্ঞাত হওয়া যায় যে, উৎকল নৃপতিগণ এই প্রদেশে আগমন পূর্বক রাজধানী স্থাপন করিবার পূর্বেই এই অঞ্চল নিবাসী খণ্ডাইতগণ কর্তৃক বরুণী ও করুণী ঠাকুরাণীদ্বয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিলেন । উৎকল রাজগণ এই স্থানে আগমন করিয়া উক্ত দেবীমূৰ্ত্তিদ্বয় স্বকীয় অধিকারে আনয়ন করেন। অদ্যাপি পূর্বকথিত খণ্ডাইতগণ প্রদত্ত দেবোত্তর সম্পত্তির কিয়দংশ বিদ্যমান আছে, এবং তাহা দ্বারাই বরুণী-করুণীঠাকুরাণীর সেবা পূজাদি কোন প্রকারে নির্বাহ হইয়া থাকে । বরুণী-করুণী ঠাকুরাণী দ্বয়ের পাদপীঠ খানি একটু বিশেষ কৌশলে নিৰ্ম্মিত। ইহার নিম্নদেশস্থ একটী রন্ধ পথ মন্দিরের পশ্চাদেশে অবস্থিত এক জলাধারের সহিত সংযুক্ত। বরুণী পৰ্ব্বত হইতে একটা ক্ষুদ্র ঝরণার জল আসিয়া উক্ত জলাধারে পতিত হইলে, উহা পাদপীঠের রন্ধ পথে নিৰ্গত হইয়া এক পয়োনালী দ্বারা মন্দিরের সম্মুখস্থ কূপ মধ্যে পতিত হয়। ধূর্ত পূজার ব্রাহ্মণের স্বার্থসিদ্ধি কল্পে ঐ বারিধারার জল দেবীদ্বয়ের দেহনিন্মুক্ত পবিত্র সলিল বলিয়া অশিক্ষিত জনসাধারণকে প্রদান করে। ས།