বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা । ঘুচিয়াছে। আমরা এক সময়ে বড় ছিলাম, এখন ছোট হইয়াছি। এ ভাবও যাইতেছে। এ ভাবের মুলেও বিদেশের মোহ প্রচ্ছন্ন ছিল । আমরা যুরোপ অপেক্ষা হীন এ জ্ঞান যতই আমাদের আত্মসন্মানে আঘাত করিতেছিল, ততই সে সম্মানকে সজীব রাথিবীর চেষ্টায় আমরা প্রবলতর বেগে আমাদের গত বৈভব ও লুপ্ত গৌরবের প্রতিষ্ঠায় নিযুক্ত হই। “তোমরা যখন পৰ্ব্বতগুহায় বাস করিতে, আম মাংস ভক্ষণ করিতে, প্রস্ত নির্মিত অস্ত্র ব্যবহার করিতে,—তখন আমরা জগতের বরণীয় ছিলাম”–এই বলিয়া বৰ্ত্তমানের হীনতাকে অতীতের স্মৃতি খারা সমাচ্ছন্ন করিতে চেষ্টা করি । ফলতঃ যতই বৰ্ত্তমানের হীনতার দুঃসহ জ্ঞান আমাদিগকে চাপিয়৷ ধরিত, ততই আমরা উৎসাহসহকারে অতীতের স্মৃতিভষ্ম মাখিয়া অtফালন করিতাম । ইহাতে যে এই হীনতাকে আরো উজ্জ্বল করিয়া দিত, এ জ্ঞান তখনে জন্মে নাই । এ জ্ঞান এখন জন্মিয়াছে। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেদের আদর্শে নিজেদের বিচার করিবার প্রবৃত্তিও প্রবল হইয়াছে। হীনতাবোধ ব্যতিরেকে উন্নতির চেষ্টা হয় না। আমরা যে হীন, এ জ্ঞান ক্রমশঃই উজ্জ্বলতর হইতেছে। মধ্যযুগের প্রতিক্রিয়ায় ইহা একরূপ নিম্প্রভ হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু এরূপ হীনতার জ্ঞান নুতন ভাবের। পূৰ্ব্বে যুরোপের তুলনায় নিজেদের হীন ভাবিতাম । আজ যুরোপের তুলনায় আর নিজেদের কোনে বিষয়ে হীন ভাবি না। নিয়ায় এখনো যে আমরা অভিজাত শ্রেণীর অশুভূক্ত—শ্রেষ্ঠ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠজনের সমকক্ষ,-যুরোপ— ভারত ও বিলাত । ২৭৩ আমেরিকার সমক্ষে যে আমরা উন্ন তমস্তকে দগুtয়মান হইতে পারি,—এ জ্ঞান এ গৌরব ক্রমশই বাড়িতেছে । এ গৌরবেই আমাদের জাতীয় অচ্যুথানের প্রতিষ্ঠ।। কিন্তু ইহারই সঙ্গে সঙ্গে, আমাদের নিজস্ব আদর্শের তুলনায় আমরা যে অতি হীন, এ জ্ঞান ও উজ্জল হইতে উজ্জ্বলতর হইতেছে । আর এই স্বাভাবিক হীনতাবোধের উপরেই আমাদের সর্ববধ জাতীয় চেষ্টার প্রতিষ্ঠা। এখানেই আমাদের শক্তি এখানেই আমাদের আশা ও ভরস । আজি আমরা ভারতকে আর বিলাতের তেীণদণ্ডে তুলিয়া ধরি না ; বিলাতকেও ভারতের তুলাদণ্ডে তুলিতে যাই না। এখন আমরা বুঝিয়াছি— “যার যেই রস সেই সৰ্ব্বো স্তম ।” কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে একথাও ভুলিয়া যাই নাই যে— “তটস্থ হইয়া বিচারিলে, আছে তর-তম।” ভারতের সনাতন সৰ্ব্বজনীন আদর্শে, তটস্থ হইয়া বিচার করিলে, উচ্চনীচ, ভালমন্দ, সকলেরই স্থান আছে । বিলাতকে ভারতের ওজনে এখন আর মাপিতে যাই না, বিলাতকে বিলাতের ওজনেই মাপিতে আরম্ভ করিয়াছি । এজষ্ঠ বিলাত সম্বন্ধে আমাদের মতামতও বিচারসিদ্ধান্তে, পুৰ্ব্বাপেক্ষ সত্যেপেত ও নিরপেক্ষ হইতেছে, সন্দেহনাই । ৯ । সাম্য ও বৈষম্য। বিলাতের সাম্য ও আমাদের সাম্যে একটা বিশেষ প্রভেদ এই যে, বিলাতী সাম্য বৈষম্যকে বিনাশ করিয়া বৈষম্যের সমাধি