বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8९8 যন্ত্রের সহিত গড়িয়াছে —হাতী, ঘোড়া, বানর, পার্থী ; জীবমাত্রেরই উপর বৌদ্ধধৰ্ম্মের যেরূপ দয়—সেই উদার জীব-দয়ার দ্বারাই উহাদের শিল্প-চেষ্ট সকল অল্প প্রাণিত । ভগবানের মূৰ্ত্তিগুলি, প্রায়ই লুপ্তাঙ্গ ; কিন্তু তাক সত্ত্বেও, বেশ চিত্তাকর্ষক ; স্মৃতিমন্দিরের এক মুখভাগে । মূৰ্ত্তি গুলি একই ধরণের, কিন্তু অন্ত মুখভাগের মূৰ্ত্তিগুলিতে এক-একটু পার্থক্য দৃষ্ট হয়। বুদ্ধদেব যোগাসনে বসিয়া—দক্ষিণ হস্তের দ্বার! একটা সাংকেতিক ভঙ্গী করিতেছেন। কোথাও বা দুই হাত কাছাকাছি করিয়া ধ্যান করিতেছেন । কোথাও ব! দক্ষিণ করতল উন্মুক্ত করিয়া উপদেশ দিতেছেন,— যেন মহাসত্য সকল তাহার রসন হইতে নিঃস্থত হইতে উদ্যত ; কোথাও বা, বাহু উত্তোলন করিয়া ধৰ্ম্মপ্রচার করিতেছেন ; অবশেষে কোথাওবা, চমৎকার গুঢ় অর্থযুক্ত অঙ্গভঙ্গীর দ্বারা সংসার ত্যাগ করিয়া সন্ন্যাস অবলম্বন করিতেছেন ঃ – পায়ের উপর হাত রহিয়াছে, ভিতরদিকে করতল অবনত, অঙ্গুলিগুলি অলসভাবে পড়িয়া আছে –একটি গভীর বৌদ্ধভাব, মানব-হৃদয়ের একটি গভীর আকাঙ্ক্ষ। এইরূপ অঙ্গভঙ্গীর দ্বারা প্রকাশ পাইতেছে,--জীবনে বিরক্তি, একটা শান্তি ও আরামের ইচ্ছ, সেই চরম পরিণাম—নিৰ্ব্বাণের অশf... আর সৰ্ব্বোচ্চ চুড়ার উপরে বৃহৎ গম্বুজের মধ্যে যে বুদ্ধমূৰ্ত্তি—উহা অসম্পূর্ণ গঠন,-যেন ইচ্ছা করিয়াই উহাকে অসম্পূর্ণ অবস্থায় রাখা হইয়াছে ঃ ভগবানের মূৰ্ত্তিকল্পনা করা মানবশক্তির অতীত, ইহাই প্রকাশ করিবার ভারতী । ভtট্র, ১৩ ১৭ জন্তই কি মুক্টিটর এই অসম্পূর্ণত ? ভগবানের সমক্ষে মানববুদ্ধির নম্র তা স্বীকার করাই কি ইহার সাঙ্কেতিক তাৎপৰ্য্য ? এইরূপ স্মৃতিমন্দির,—একটা ধৰ্ম্মের ভাব মনে গভীররূপে মুদ্রিত করিয়া দেয় । একটু অমুকুল ইচ্ছা ও সহানুভূতির কল্পনা থাকিলে আজিও এইরূপ ধৰ্ম্মের ভাব উপলব্ধি করা যায়। আভাস ইঙ্গিতের দ্বারাই শিল্পকলা কাজ কবে : যেরূপ ছন্দ সঙ্গীত ও কবিতায় সেইরূপ বাস্তশিল্পে, ইচ্ছা করিয়া একই মুণ-কল্পনার ক্রমাগত আবৃত্তি করায়, মামুষের ইচ্ছাশক্তি ক্রমশ যেন নিদ্রিত হইয়া পড়ে, এবং চৈতপ্ত কতকটা সন্মোহনমুপ্তির অবস্থায় উপনীত হয় ; তখন তাহার নিকট যে কোন ধৰ্ম্মভাবের আভাস ইঙ্গিত উপস্থিত করিবে তাঁহাই সে গ্রহণ করিবে । এই সকল একই প্রকারের বড় বড় বুদ্ধমূৰ্ত্তি, এবং প্রস্তরে উৎকীর্ণ বিভিন্ন প্রকারের ক্ষুদ্র বুদ্ধমূৰ্ত্তি দেখিয়া দেখিয়া, ক্রমশ চিত্ত যেন এক প্রকার স্বাধিক মোহের দ্বারা অভিভূত হয় । অন্তরের অন্তরতম প্রদেশে বৌদ্ধভাব ক্রমশ প্রবেশ লাভ করে। সিংহলে কোন বুদ্ধমূৰ্ত্তিতে সন্ন্যাসের অঙ্গভঙ্গী প্রথম দেখিয়া যেরূপ মুগ্ধ হইয়াছিলাম, এখানে দেখিয়া তাহা অপেক্ষা আরও মুগ্ধ হইয়াছি ; আমি ষেন এখন মানুষকে বেশী বুঝিতে পারিখেছি, বেীন্ধনীতির গভীরতা আরও বেশী উপলব্ধি করিতে পারিতেছি । যে সকল যাত্রী এই মন্দিরে আইসে,--ফিরিয়া যাইবার সময়, বৌদ্ধধৰ্ম্মের অপ্রতিম প্রভাবে তাহাদের বিশ্বাস আরও বদ্ধিত হয়, অনিবাৰ্য্য দুঃখকষ্টে তারা আরও ধৈর্য্য অবলম্বন করিতে পারে, সৰ্ব্ব