পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8१३ প্রাণের অস্তঃস্তল হইতে বালিকার কল্যাণকামনায় আকুল প্রার্থনা বাহির হইয়া বিশ্বরাজের চরণতলে লুটাইয়া পড়িতেছিল ! মাথার উপর চন্দ্ৰ হাসিতেছে। নক্ষত্র জলিতেছে। খণ্ড খণ্ড লঘু মেঘ চন্দ্রকর-স্নাত হইয়া আকাশের গায় ভাসিয়া যাইতেছে ;– যাহা কিছু চক্ষে পড়িল, সবই তো সুন্দর— অমুন্দর কিছু দেখিলাম না ! বুঝলাম, পিতামহের বাক্যই সত্য—বালিকা রক্ষা পাইবে । ( 8 ) তার পর প্রায় আট বৎসর চলিয়া গিয়াছে। অবস্থার কত পরিবর্তন হইয়াছে ; প্যারীশঙ্কর বাবুর কন্ঠ নিরাময় হইয়া উঠিলে সুরেশের সঙ্গে তাহার বিবাহ হইয়াছে ; কিন্তু বল বাহুল্য, আমার এখনও বিবাহ হয় নাই। সুদীর্ঘকালের মধ্যে কত বালিকা, কত কিশোরী, কত যুবতী দেখিলাম, কই, কাহারও নয়ন সৌন্দর্য্য তো আমাকে মুগ্ধ করিতে পারে নাই। বিধাতা কি সে চক্ষু নিৰ্ম্মাণ করিতে ভুলিয়া গিয়াছেন ! এ কি নিষ্ঠুর জ্যোতির্ষিক গণনা আমাকে ঘিরিয়া রহিয়াছে ! ভারতী । আশ্বিন, ১৩১৭ ব্যর্থ, উন্মুখ আশা, আকণ্ঠ পরিপূর্ণ তৃষা লইয়। আমার মানসীর সন্ধানে আমি কোথায় যাইব ? হা ভগবান, শুধু এক মুহূর্তের জন্ত আমাকে আমার সেই মানসী প্রতিম দেখইয়া দাও ! মৃত্নগুঞ্জনে আশাবেড়া আমার প্রাণের মাঝে ঝঙ্কার দিয়া বলিত “ওগো সে আছে, সে আছে, সে অাছে !” এ আশা মিথ্যা হইল না, এ আকাঙ্ক্ষা অপুর্ণ রহিল না, সত্যই একদিন তাহাকে দেখিলাম ; আমার ভাগিনেয়ীর বিবাহ রজনীতে বাসর গৃহের এক পাশ্বে দণ্ডায়মান সেই চির-আকাঙ্ক্ষিত ষোড়শ মূৰ্ত্তি দেখিতে পাইলাম, একবার চোখে চোখে মিলন হইল— এক মুহূৰ্ত্ত মাত্র ;–সেই মুহূর্তের দৃষ্টিতে এক অভূতপূৰ্ব্ব অমৃতময় বিদ্যুৎ তরঙ্গে বিশ্বব্রহ্মাও যেন আলোড়িত, লুপ্ত হইয়া উঠিল। কিন্তু কে এ রমণী ? এ শুভ দৃষ্টি কাহার সহিত ? পরিপূর্ণ যৌবন-শ্ৰীমণ্ডিত, দেবতার পুণ্য আশীৰ্ব্বাদ রূপিণী এ রমণী কে ? cস গৌরী ! সে আজ বিধবা ! ঐযতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত । ইংরাজদিগের ক্রীড়াকৌতুক ছোট খাট কাজ কৰ্ম্মে, আচারব্যবহারে কোন মানুষ বা জাতির স্বভাবলক্ষণ যেমন ধরা পড়ে, এমন তাহার কোন বৃহৎ অনুষ্ঠানে নহে । পাশ্চাত্য জাতির যে আজ পৃথিবী জুড়িয়া এত প্রতাপ—তাহার প্রধান কারণ র্তাহীদের সামান্ত কাজটিও উদ্দেশ্ববিহীন নছে ; পান হইতে চূর্ণটুকুও যাহাতে নিরর্থক নী খসে, সে দিকেও সর্বদ তাহদের দৃষ্টি ;– এমন কি তাহীদের প্রত্যেক পদক্ষেপে— প্রত্যেক অঙ্গচালনায় পৰ্য্যন্ত একটি আদায়ের অভিপ্রায় নিহিত । আমরা যদি তাহাদের সামান্ত ক্রীড়াকৌতুকগুলির প্রতি লক্ষ্য করিয়া দেখি—তাহ হইলে এ কথার সার্থকতা সহজেই উপলব্ধি করিতে পারি। আমাদের দেশে তাপ দশ পচিশ বড় আমোদজনক থেলা । দুই চারিজনে মিলিলেন,