বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, যষ্ঠ সংখ্যা । ভারত ও বিলাত । 8ላ፳ ভারত ও বিলাত । বিলাত-প্রবাসীর পত্র । ৯ । সভ্যতার মাপকাটি । সভ্যত কা’কে বলে ? এই কথা লইয়া যুরোপের সঙ্গে বাকি দুনিয়ার একটা গুরুতর বিরোধ ক্রমে পাকিয়া উঠিতেছে। এত কাল ধরিয়া সাদা জাতের সভ্যতার দাবিটাকে দুনিয়ার লোকে নীরবে স্বীকার করিয়া লইয়াছিল। যুরোপ যদি সংযত হুইয়া চলিতে পারিত, আত্মবিলোপের ভিতর দিয়া যে মহত্তর আয়ু প্রতিষ্ঠার পন্থা যিশুখৃষ্ট দেখাইয়া গিয়াছিলেন, খৃষ্টোপাসকেরা যদি সে পথ হইতে ভ্ৰষ্ট হইয়া না পড়িত, তবে আজো এ দাবির প্রতিবাদ করিতে কেহ দাড়াইত কি না, সন্দেহের কথা । সৰ্ব্বত্রই লোকে সংযমের সন্মান করিয়া থাকে, বিশেষতঃ শক্তিশালীর ংযমের সমক্ষে মানুষের মাথা আপনা হইতেই ভক্তিভরে অবনত হইয় পড়ে। শ্রেষ্ঠজনে যদি সংষম ছাড়িয়া আপনার শ্রেষ্ঠত্ব লইয়া অীক্ষালন করিতে আরম্ভ করেন, প্রাকৃত জনে আর সে শ্রেষ্টত সহজে মানিয়া লইতে চাহে না | ধরে বেঁধে যে কেবল প্রেম হয় না, তা’ নয় ; ধরে বেঁধে ভক্তি এবং শ্রদ্ধাও হয় না। যুরোপ যে দিন ধরে বেঁধে আপনার শ্ৰেষ্ঠতা প্রতিষ্ঠিত করিতে আরম্ভ করিয়াছে, সে দিন হইতেই এ শ্রেষ্ঠত্ব সাচ্চ না ভেজাল জিনিষ, এ সন্দেহও লোকের মনে উঠিয়াছে। এ সন্দেহ আজ দৃঢ় হইয়াছে। তার সঙ্গে সঙ্গে যুরোপের সভ্যতা ও সাধনাকে লোকে সুক্ষ্মভাবে পরখ করিতে আরম্ভ कब्रिग्नांtछ् । কিছুদিন পূৰ্ব্ব পর্য্যস্ত, ভারতের ইংরেজিনবিশের যুরোপীয় সভ্যতাকে সাৰ্ব্বজনীন সভ্যতার আদর্শ বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিল। সে মোহ ক্রমে কাটিতেছে, কিন্তু এখনো একেবারে কাটিয়াছে বলিয়। মনে হয় না । য়ুরোপের ধৰ্ম্ম যে ভারতের সনাতন ধৰ্ম্ম অপেক্ষ কোনে রূপে শ্রেষ্ঠ নহে, দেশের ইংরেজি নবিশেরাও বহুদিন হইতে এ কথা একরূপ মানিয়া লইয়াছেন । কিন্তু স্বদেশী ধৰ্ম্মের শ্রেষ্ঠত্ব মানিয়াও, স্বদেশের সমাজগঠনের হীনতা অনেকেই স্বীকার করিতেন । এজন্ত ধৰ্ম্ম-সংস্কারকের উপাসনাকাণ্ডে খৃষ্ট-তত্ত্ব ও খৃষ্টীয় পদ্ধতি বজ্জন করিয়াও, সামাজিক রীতিনীতি বিষয়ে খৃষ্টায় সমাজের অল্প-বিস্তর অমুকরণ হইতে বিরত হন নাই। ইহার হিন্দুর বর্ণভেদের উপরে খড়গহস্ত। এ বর্ণভেদের দোষ অনেক, ইহা অস্বীকার না করিয়াও, ইহা যে খৃষ্টীয়দেশের শ্রেণীভেদ অপেক্ষা ভাল বই মন্দ নহে,-হিন্দুর বর্ণভেদে মনুষ্যত্ত্বের যে অবমাননা করা হইয়াছে, খৃষ্টীয় দেশের শ্রেণীভেদে যে তদপেক্ষা শতগুণ অধিক অবমাননা করা হয়, এ কথা স্বীকার করা যাইতে পারে। কিন্তু আমাদের সমাজ ংস্কারকেরা কখনো গভীরভাবে এই বর্ণভেদ ও শ্রেণীভেদের মুল অনুসন্ধান করিয়া দেখেন নাই । তাই অনেক সময় আমাদের প্রাচীন জাতি বা বর্ণভেদের উপর প্রতিষ্ঠিত সমাজ-গৃহকে ভাঙ্গিয়া চুরিয়া বিদেশী শ্রেণীভেদের উপর নতুন করিয়া গড়িয়া তুলিবার