পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, প্রথম সংখ্যা । স্বাঞ্জাত বুদ্ধির উপর বরাত দিয়েছি, ভারতবর্ষের অন্তর্গত মামুষের সঙ্গে মানুষকে মিলিয়ে দেবার জন্তে । আমরা বলচি, তা নাহলে আমরা বড়’হব না, বলিষ্ঠ হব না, আমাদের প্রয়োজন সিদ্ধি হবে না । আমরা ধৰ্ম্মকে এমন জায়গায় এমে ফেলেছি যে আমাদের জাতীয় স্বাৰ্থ বুদ্ধি প্রয়োজন বুদ্ধিও তার চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। এমন দশা হয়েছে যে, ধৰ্ম্মে আমাদের উদ্ধার নেই, স্বtজাত্যের দ্বারা আমাদের উদ্ধার পেতে হবে । এমন হয়েছে যে ধৰ্ম্ম আমাদের পৃথক থাকৃতে বলচে, স্বজাত্য আমাদের এ ক হবার জন্তে তাড়ন করচে ! কিন্তু ধৰ্ম্মবুদ্ধি যে মিললেব ঘটক নয় সে মিলনের উপর আমি ভরসা রাখতে পারিনে । ধৰ্ম্মমূলক মিলনতত্ত্বটিকে আমাদের দেশে যদি প্রতিষ্ঠিত করতে পাবি, তবেই স্বভাবতই আমরা মিলনের দিকে যাব, কেবলি গণ্ডি র্তীকবার এবং বেড়া তোলবার প্রবৃত্তি থেকে আমরা নিস্কৃতি পাব । ধৰ্ম্মের সিংহদ্বার থেtলী থাকুলে তবেষ্ট ছোট বড় সকল যজ্ঞের নিমন্ত্রণেই মানুষকে আমরা আহবান করতে পjরব ;—নতুবা কেবলমাত্র প্রয়োজনের বা স্বাঞ্জাত্যঅভিমানের খিড়কির দরজাটুকু যদি খুলে রাখি তবে ধৰ্ম্মনিয়মের বাধা অতিক্রম করে সেই ফাকটুকুর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের এত প্রভেদ পার্থক্য এত বিরোধবিচ্ছেদ গলতে পারবে না, মিলতে পারবে না। ধৰ্ম্মান্দোলনের ইতিহাসে এইটি বরাবর দেখা গেছে ধৰ্ম্ম যখন আপনার রসের মূৰ্ত্তি প্রকাশ করে তখনি সে বাধন ভাঙে এবং সকল মানুষকে এক করবার দিকে ধাবিত হয়। রসের ধৰ্ম্ম । 8 × খৃষ্ট যে প্রেমভক্তিরসের বস্তাকে মুক্ত করে দিলেন তা ব্লিছদিধৰ্ম্মের কঠিন শাস্ত্র বন্ধনের মধ্যে নিজেকে বদ্ধ রাখতে পারলে না এবং সেই ধৰ্ম্ম আজ পর্য্যস্ত প্রবল জাতির স্বার্থের শৃঙ্খলকে শিথিল করবার জন্ত নিয়ত চেষ্টা করচে, আজ পর্য্যন্ত সমস্ত সংস্কার এবং অভিমানের বাধা ভেদ করে মানুষের সঙ্গে মানুষকে মেলাবার দিকে তার আকর্ষণ শক্তি প্রয়োগ করচে । বৌদ্ধধৰ্ম্মের মূলে একটি কঠোর তত্ত্বকথা আছে কিন্তু সেই তত্ত্বকথায় মানুষকে এক করেনি ; তার মৈত্রী তার করুণ এবং বুদ্ধদেলের বিশ্বব্যাপী হৃদয় প্রসারতাই মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রভেদ ঘুচিয়ে দিয়েছে। নানক বল, রামানন্দ বল, কবীর বল, চৈতন্ত বল সকলেই রসের আঘাতে বাধন ভেঙে দিয়ে সকল মানুষকে এক জায়গায় ডাক দিয়েছেন । তাই বলছিলুম, ধৰ্ম্ম যখন আচারকে নিয়মকে শাসনকে আশ্রয় করে” কঠিন হয়ে ওঠে, তখন সে মানুষকে বিভক্ত করে দেয়, পরস্পরের মধ্যে গতিবিধির পথকে অবরুদ্ধ করে। ধৰ্ম্মে যখন রসের বর্ষা নেবে আসে তখন যে-সকল গহবর পরম্পরের মধ্যে ব্যবধান রচনা করেছিল তারা ভক্তির স্রোতে প্রেমের বদ্যায় ভরে ওঠে, এবং সেই পুর্ণতায় স্বাতন্ত্র্যের আচল সীমাগুলিই সচল হয়ে উঠে অগ্রসর হয়ে সকলকে মিলিয়ে দিতে চায়, বিপরীত পারকে এক করে দেয় এবং দুর্লঙ্ঘা দূরকে আনন্দবেগে নিকট করে আনে। মানুষ যখনি সত্যভাবে গভীরভাবে মিলেছে তখন কোনো একটি বিপুল রসের আবির্ভাবেই