সাময়িকভাবে এবং বহুকাল পর্য্যন্ত তাহাকে সমর্থন করিলেও শেষ পর্য্যন্ত তাহা কখনই কৃতকার্য্য হয় নাই। আমি বলিয়াছি যে, ভারতের প্রাচীন মনীষা সমস্যাটির মূলস্বরূপ আরও ভালভাবে বুঝিয়াছিল। বৈদিক ঋষি ও তাঁহাদের উত্তরাধিকারিগণ ভারতীয় জীবনের আধ্যাত্মিক ভিত্তি স্থাপন করা এবং ভারতের অন্তর্গত বহু জাতি (Races) ও জনসমাজের মধ্যে আধ্যাত্মিক ও কৃষ্টিমূলক ঐক্যস্থাপন করাকেই তাঁহাদের প্রধান কার্য্য বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিলেন। কিন্তু তাঁহারা রাষ্ট্রনীতিক ঐক্যের প্রয়োজন সম্বন্ধেও অন্ধ ছিলেন না। তাঁহারা দেখিয়াছিলেন, আর্য্যগণের কুলপ্রথামূলক জীবনের নিরন্তর প্রবৃত্তি হইতেছে, বিভিন্ন আকারের কুল, বংশ, রাজ্য পরস্পরের সহিত সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হইবে, এবং সকলে মিলিয়া কাহারও নেতৃত্ব স্বীকার করিয়া লইবে, এই ভাবে বৈরাজ্য ও সাম্রাজ্যের অধীনে দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হইবে; তাঁহারা বুঝিয়াছিলেন যে, এই প্রবৃত্তির পূর্ণ পরিণতির দিকে অগ্রসর হওয়াই ঠিক পন্থা, এবং সেইজন্য তাঁহারা চক্রবর্ত্তীর আদর্শ বিকাশ করিয়াছিলেন—এক ঐক্যসাধক সাম্রাজিক শাসন আসমুদ্রহিমাচল সমগ্র ভারতের অন্তর্গত বহু রাজ্য ও জাতিগুলিকে (Races) তাহাদের স্বাতন্ত্র্য নষ্ট না করিয়া ঐক্যবদ্ধ করিবে। এই আদর্শটিকে তাঁহারা ভারতীয় জীবনের অন্যান্য সকল বিষয়ের ন্যায়ই ধর্ম্ম ও
পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় ঐক্যসাধন সমস্যা
১০৯