পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় রাষ্ট্রবিকাশের ধারা
৭৫

বিভাগ অন্যান্য দেশের ন্যায় গিল্ড্ বা বৃত্তিসঙ্ঘ গঠন করিয়া সম্পন্ন হইতে পারিত। বস্তুতঃ নগরসকলে আমরা শক্তিশালী ও দক্ষ গিল্ড্ প্রথার[১] অস্তিত্ব দেখিতে পাই। কিন্তু কালক্রমে এই প্রথা অব্যবহার্য্য হইয়া পড়ে এবং অধিকতর ব্যাপক জাতিভেদপ্রথাই সর্ব্বত্র অর্থনীতিক কর্ম্মবিভাগের একমাত্র ভিত্তি হইয়া দাঁড়ায়। নগরে ও গ্রামে জাতি ছিল স্বতন্ত্র কম্যুন্যাল মূল অনুষ্ঠান, উহা ছিল একই সঙ্গে ধর্ম্ম, সমাজ ও অর্থনীতিবিষয়ক সঙ্ঘ, নিজের ধার্ম্মিক, সামাজিক ও অন্যান্য প্রশ্নের মীমাংসা নিজেই করিত, এবং নিজের অন্তর্গত লোকসকলের আধিপত্য করিত, তাহাতে বাহিরের কেহ কোনরূপ হস্তক্ষেপ করিতে পারিত না। কেবল ধর্ম্মের মূলতত্ত্ব-সম্বন্ধীয় প্রশ্নসকল সমাধানে শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণদের ব্যাখ্যা ও বিধানই প্রামাণ্য বলিয়া স্বীকার করা হইত। যেমন কুলের তেমনই প্রত্যেক জাতিরও জাতিধর্ম্ম অর্থাৎ জীবনযাত্রা ও আচারব্যবহার সম্বন্ধে নিজ নিজ বিশিষ্ট রীতি-নীতি ছিল, এবং জাতির কম্যুন্যাল বা সমষ্টিগত জীবনের মুখপাত্রস্বরূপ জাতীয় সমিতি বা জাতিসঙ্ঘ ছিল।


  1. গিল্ড্ (Guild) বলিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্ঘ বুঝায়। প্রাচীন ভারতে ইহাদিগকে “শ্রেণী” বা “পুগ” বলা হইত। নগরের গিল্ড্ সমূহকে সাধারণভাবে “নৈগম” বলা হইত। —অনুবাদক।