পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-ভ্ৰমণ। . যাত্ৰিগণ এই বৃক্ষকে তিনবার প্রদক্ষিণ করিয়া বিষ্ণুরূপে পূজা করিয়া থাকেন। এই প্রাঙ্গণের চতুর্দিকে, সূৰ্য্যমূৰ্ত্তি নরসিংহমূৰ্ত্তি, ভূষণ্ডিকাকেরামূৰ্ত্তি ক্ষেত্ৰপালের মূৰ্ত্তি প্ৰভৃতি বহু মূৰ্ত্তি বিরাজমান, সে সকলের বিস্তৃত বর্ণনা নিম্প্রয়োজন। ক্ষেত্রপালমূৰ্ত্তির পশ্চাতে মুক্তি মণ্ডপ, যখন শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্য পুরুষোত্তমক্ষেত্রে অবস্থিতি করিতেন সে সময়ে মহারাজা প্ৰতাপরুদ্র ইহা নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন । এখানে সময়ে সময়ে নানা বিভিন্ন দেশ হইতে আগত পণ্ডিতবর্গ যাত্রীদিগকে শাস্ত্রব্যাখ্যাদি শুনাইয়া থাকেন। গণেশমূৰ্ত্তির পশ্চিমভাগে একটী কুণ্ড আছে। ইহার মাহাত্ম্য উৎকালখণ্ড, কপিল-সংহিতা ইত্যাদি গ্রন্থে সবিস্তারে বর্ণিত আছে। এই কুণ্ডের পশ্চিমভাগেই বিমলা দেবীর মন্দির অবস্থিত, মন্দিরটা দেখিলেই ইহাকে অতিশয় প্রাচীন বলিয়া বোধ হয়। বিমলা দেবী অষ্টশক্তির অন্যতম শক্তি। তান্ত্রিকগণের মতে ইনিই শ্ৰীক্ষেত্রের অধিষ্ঠাত্রী আদ্যাশক্তি ও জগন্নাথদেব তাহার ভৈরব । দেখিলাম অনেক রমণী ইহার ললাটে সিন্দুর স্পর্শ করাইয়া তাহা গৃহে লইয়া যাইবার জন্য অঞ্চলস্থ কোঁটায় সযত্নে রাখিয়া দিতেছে । পুরীর অন্যান্য দেবী মূৰ্ত্তি অপেক্ষা ইনিই অধিক প্রাচীন, মৎস্যপুরাণে লিখিত আছে যে— “গয়ায়াং মঙ্গলা নাম বিমলা পুরুষোত্তমে ॥” আশ্বিন মাসে মহাষ্টমীর দিবস গভীর নিশীথে যখন শ্ৰীশ্ৰীজগন্নাথদেবের শয়ন হইয়া যায় তখন বিমলা দেবীর সম্মুখে ছাগবলি দেওয়া হয়, এতদ্ব্যতীত পুরুষোত্তমধামের আর কোথাও ছাগবলি হইতে পারে না । উৎকৃষ্ট ভোগান্নে ইহার ভোগ হয়। বিমলা দেবীর উত্তরদিকে ও দক্ষিণদিকে শ্ৰীশ্ৰী রাধাকৃষ্ণমূৰ্ত্তি বিরাজিত, —ইহার দক্ষিণভাগে ভাণ্ড গণেশ, উত্তরে গোপীনাথ মূৰ্ত্তি, তাহারও উত্তরদিকে মাখনচোরার মূৰ্ত্তি, ও তাহার উত্তরে সরস্বতী এবং নীলমাধবের মূৰ্ত্তি বিরাজিত। এ সকল মন্দিরে দেবদর্শনার্থ লোক স্রোতের মত প্ৰবেশ করিতেছে ও নিজ নিজ অভিপ্রায়ানুযায়ী দর্শনী প্ৰদান করিয়া বাহিরে আসিতেছে—যাত্ৰিগণের সকলের বদন-কমল এক অপূর্ব আনন্দ উচ্ছাসে উচ্ছসিত । নীলমাধবের মন্দিরের উত্তরদিকে সুদৃশ্য কারুকাৰ্যসম্পন্ন লক্ষনীর মন্দির অবস্থিত, এই মন্দিরের গঠনপ্রণালী ও শিল্পনৈপুণ্য বিশেষ । প্রশংসনীয়। জগন্নাথদেবের মন্দিরের স্বায় এই মন্দিরও চারি অংশে