পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
ভ্রান্তিবিলাস।

কার ক্ষুধা নাই; আপনকার ক্ষুধা নাই, কারণ আপনি বিলক্ষণ জলযোগ করিয়াছেন; কিন্তু আপনকার অনুপস্থিতি জন্ত আমরা অনাহারে মারা পড়িতেছি।

 এই সমস্ত কথা শুনিয়া, হেমকূটবাসী চিরঞ্জীব ভাবিলেন, পরিহাসরসিক কিঙ্কর কৌতুক করিতেছে। তখন তিনি কিঞ্চিৎ বিরক্তি প্রকাশ করিয়া কহিলেন, কিঙ্কর! আমি এখন তোমার পরিহাসরসের অভিলাষী নহি; তোমার হস্তে যে স্বর্ণমুদ্রা দিয়াছি, কাহার নিকট রাখিয়া আসিলে, বল। সে চকিত হইয়া কহিল, সে কি, আপনি স্বর্ণমুদ্রা আমার হস্তে কবে দিলেন; কেবল বুধবার দিন, চর্ম্মকারকে দিবার জন্য, চারি আনা দিয়াছিলেন, সেই দিনেই তাহাকে দিয়াছি, আমার নিকটে রাখি নাই; চর্ম্মকার কর্ত্রী ঠাকুরাণীর ঘোড়ার সাজ মেরামত করিয়াছিল। শুনিয়া সাতিশয় কুপিত হইয়া, চিরঞ্জাব কহিলেন, কিঙ্কর! এ পরিহাসের সময় নয়; যদি ভাল চাও, স্বর্ণমুদ্রা কোথায় রাখিলে, বল। আমরা ঘটনাক্রমে এই নিতান্ত অপরিচিত অবান্ধব দেশে আসিয়াছি; কি সাহসে, কোন বিবেচনায়, তত স্বর্ণমুদ্রা অপরের হস্তে দিলে। কিঙ্কর কহিল, মহাশয়। আপনি আহারে বসিয়া পরিহাস করিবেন, আমরা আছাদিত চিত্তে শুনিব। এখন আপনি গৃহে চলুন; কর্ত্রী ঠাকুরাণী সত্বর আপনারে লইয়া যাইতে বলিয়া দিয়াছেন; বিলম্ব হইলে, কিংবা আপনারে না লইয়া গেলে, আমার লাঞ্ছনার সীমা থাকিবেক না; হয় ত, প্রহার পর্য্যন্ত হইয়া যাইবেক।