কালমক্ ও তাতারী গৃহদ্বার ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেল। সন্ধ্যার সময়ে ময়ূখ গৃহত্যাগ করিলেন, কাল্মক্ দূরে লুকাইয়া থাকিয়া তাহা দেখিল এবং দূরে থাকিয়া তাহার অনুসরণ করিল। দুই দণ্ড পরে কাল্মক্ ফিরিয়া আসিয়া গৃহদ্বারে করাঘাত করিল। ভিতর হইতে জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কে?” কাল্মক্ কহিল, “হামি।”
বিনোদিনী প্রশ্ন করিতেছিল, কণ্ঠস্বর শুনিয়া তাহার সন্দেহ হইল, সে দুয়ারের নিকটে আসিয়া পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, “কে গা?”
কাল্মক্ পুনরায় কহিল, “হামি।”
বিনোদিনী এইবার রাগিল; “তুই কেরে মিন্সে?” কাল্মক্ সাহসে ভর করিয়া কহিল, “হামি মহুক্।”
বিনোদিনী পা টিপিয়া টিপিয়া ফিরিয়া গেল এবং ললিতাকে কহিল, “দেখ ললিতা, এক মিন্সে চোর আসিয়াছে, তুই এক হাঁড়ি পচা গোবর লইয়া ছাদে যা, আমি যখন দুয়ার খুলিব সেই সময়ে মিন্সের মাথায় ঢালিয়া দিবি।”
ললিতা গোবরের হাঁড়ি লইয়া ছাদে চলিয়া গেলেন। তখন বিনোদিনী গোশালার পুরাতন সম্মার্জ্জনী সংগ্রহ করিয়া আনিয়া দুয়ার খুলিয়া ফেলিল। সেই সময়ে ললিতা বহুদিনের সঞ্চিত কৃমিময় দুর্গন্ধ গোময়রাশি কাল্মকের মস্তকে বর্ষণ করিল। তাহার চক্ষু, মুখ ও নাসিকা বন্ধ হইয়া গেল, আর বিনোদিনীর সম্মার্জ্জনী ভীষণবেগে তাহার