পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
১৯

বারুদ ও গোলা ভরিয়া রাখিল। তখন সকলে মিলিয়া নৌকা বাহিতে আরম্ভ করিল, নৌকা নক্ষত্র বেগে ছুটিল।

 রজনীর দ্বিতীয় যাম অতিবাহিত হইলে, ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে তীব্র আলোক দৃষ্ট হইল। তাহা দেখিয়া প্রৌঢ় কর্ণধারকে জিজ্ঞাসা করিলেন,—“কিনু, কিসের আলো?” “কোনও গ্রামে আগুন লাগিয়াছে বোধ হয়।” “আলো বড়ই জোর, দুই এক খানি ঘরে আগুন লাগিলে এত আলো হইত না।” দেখিতে দেখিতে নৌকা আলোকের নিকটবর্ত্তী হইল, সকলে দেখিতে পাইলেন যে, একখানি বৃহৎ গ্রাম অগ্নিতে জ্বলিয়া উঠিয়াছে; তখন প্রৌঢ় কহিলেন, “এত বড় গ্রাম এক সঙ্গে জ্বলিয়া উঠিল কি করিয়া?” কেনারাম কহিল, “হুজুর, বোধ হয়, কেহ ইচ্ছা করিয়া আগুন লাগাইয়া দিয়াছে।” “ফিরিঙ্গি নহে ত?” “ভগবান্‌ জানেন, হুজুর, অনুমতি হইলে ছিপ কিনারায় লাগাই। ছায়ায় ছায়ায় চলিলে বিপদের সম্ভাবনা অল্প।” “তবে তাহাই কর।” ছিপ ফিরিল এবং ভাগীরথীর পশ্চিম কূলের নিম্নে চলিতে আরম্ভ করিল। সহসা কর্ণধার দীর্ঘাকার কোশা দেখিতে পাইয়া একটি ক্ষুদ্র খালের মধ্যে ছিপ চালাইয়া দিল। বৃক্ষতলের অন্ধকারে ছিপ বাঁধিয়া সকলে তীরে নামিল, কেবল পঁচিশ জন নাবিক পাহারায় রহিল। তীরে নামিয়া প্রৌঢ় জিজ্ঞাসা করিলেন, “ঠাকুর, এ গ্রাম কি আপনার পরিচিত?” ময়ূখ কহিলেন, “না, গ্রামের ভিতরে প্রবেশ না করিয়া গঙ্গাতীরের পথে চলুন, তাহা হইলে নৌকা