পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫২
ময়ূখ

এখন খোয়াবগাহে, কিন্তু দেওয়ান সাহেব বলিলেন, যে বাদশাহের দরবার হইতে জরুরী পাঞ্জা লইয়া একজন সওয়ার আসিয়াছে।”

 নবাব বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “হরেকিষণকে গোসলখানায় অপেক্ষা করিতে বল, আমি আসিতেছি।” খোজা পুনরায় অভিবাদন করিয়া প্রস্থান করিল। '

 সদরখালিসার দেওয়ান হরেকৃষ্ণ রায়, বঙ্গজ কায়স্থ, খর্ব্বাকৃতি, ঘোর কৃষ্ণবর্ণ। তিনি বুদ্ধিবলে সামান্য অবস্থা হইতে উন্নত হইয়া এই উচ্চপদ লাভ করিয়াছিলেন। তখন সামান্যবংশজাত হিন্দুর পক্ষে ইহা অপেক্ষা উচ্চতর রাজপদ লাভ করা প্রায় সম্ভব হইত না। বাদশাহের সওয়ার তখনও দেওয়ানখানায় অপেক্ষা করিতেছিল, সেই জন্য হরেকৃষ্ণ অধীর হইয়া ইতস্ততঃ পাদচারণ করিতেছিলেন। বাদশাহের পত্র অথবা ফর্ম্মাণ স্বয়ং সুবাদার ব্যতীত আর কেহ গ্রহণ করিতে পারিত ন। হঠাৎ তাঁহার সম্মুখে মনুষ্যের ছায়া পড়িল, দেওয়ান ভীত হইয়া দুইপদ পিছু হটিয়া গেলেন। তখন দেওয়ানখানার একটি স্তম্ভের অন্তরাল হইতে গুরুগম্ভীর স্বরে উচ্চারিত হইল, “হরেকৃষ্ণ, ভয় নাই।” দেওয়ান চাহিয়া দেখিলেন যে গৈরিকবসন-পরিহিত একজন দীর্ঘাকার সন্ন্যাসী স্তম্ভের পার্শ্বে দাঁড়াইয়া আছেন। হরেকৃষ্ণ ব্যস্ত হইয়া সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, “প্রভু, সমস্ত কুশল ত?” “কুশল জিজ্ঞাসা পরে করিও, আমি বিশেষ প্রয়োজনে ঢাকায় আসিয়াছি, তুমি