পাতা:ময়ূখ - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৭৪
ময়ূখ

বৈষ্ণবী আবার উঠিয়া দাঁড়াইল। দূর হইতে পাগলিনীর কাতর আহ্বান শুনা যাইতেছিল, বিনোদিনীর মুখ শুকাইয়া গেল। পাগলিনী ছুটিয়া আসিয়া বৈষ্ণবীর কণ্ঠলগ্না হইল, সঙ্গে সঙ্গে পল্লীর স্ত্রী পুরুষে ক্ষুদ্র অঙ্গন ভরিয়া গেল। বিনোদিনী বৈষ্ণবীর পালিতা কন্যা বলিয়া অনেকে তাহাকে চিনিত; তাহারা বিনোদিনীকে ভয় করিত, কিন্তু সে পাগল বলিয়া, তাহাকে ভালবাসিত। পাগলিনী বৈষ্ণবীর বুকে মুখ লুকাইয়া ফুকারিয়া কাঁদিয়া উঠিল; কিন্তু তাহার প্রতি চারিদিক হইতে যে অজস্র প্রশ্নবাণ বর্ষিত হইতেছিল সে তাহার উত্তর দিল না।

 অনেকক্ষণ পরে বিনোদিনী তাহাকে ঘরে লইয়া গিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কি হইয়াছে মা? কাঁদিলে কেন?” পাগলিনী আবার কাঁদিয়া উঠিল, কিন্তু এইবার সে কথা কহিল। সে বলিল, “মা, সে আসিয়াছে।” বৈষ্ণবী সাগ্রহে জিজ্ঞাসা করিল, “কে আসিয়াছে মা?” “সেই যে, সে।” “সে কে, সে তোমার কে হয়?” “তাহা জানি না, কিন্তু তাহাকে চিনি, সেই সে।” “তাহাকে কোথায় দেখিলে? সে কোথায়?” “গঙ্গার ধারে ঘাসের উপরে শুইয়া আছে।” “তাহাকে ডাকিয়া আনিলি না কেন মা?” “কত ডাকিলাম, সেত উঠিল না মা।” “তাহার নাম কি?” “তাহা মনে নাই।” “তাহার নিবাস কোথায়?” “কেন আমাদের গ্রামে?” “কোন্‌ গ্রামে?” “তাহা মনে