মরণের ডঙ্কা বাজে
বন্দরে জাহাজ এসে থামলে সুরেশ্বর ও বিমল চীনে কুলী দিয়ে মালপত্র এনে দু’খান রিক্সা ভাড়া করলে। ওরা দু'জনেই একটা ভারতীয় হােটেল দেখে নিয়ে সেখানেই উঠলাে। বিকালের দিকে সুরেশ্বর তার ওষুধের ফার্ম্মের কাজে কয়েক জায়গায় ঘুরে এল। বিমল যে ভদ্রলােকের নামে চিঠি এনেছিল, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেল।
সন্ধ্যার পূর্ব্বে সুরেশ্বর ফিরে এসে দেখলে বিমল বিষন্ন মুখে ঘরে বসে আছে।
সুরেশ্বর জিগ্যেস করলে— কি হয়েছে? অমন ভাবে বসে কেন?
বিমল বল্লে— ভাই এতদূরে পয়সা খরচ করে আসাই মিথ্যে হােল? আমি যা ভেবে এখানে এলুম, তা হবার কোনাে আশা নেই। যে ভদ্রলােকের নামে চিঠি এনেছিলাম, তাঁর নিজের ভাগনে ডাক্তার হয়ে এসে বসেচে। আমার কোনাে আশা নেই।
সুরেশ্বর বললে— তাতে কি হয়েছে? এতবড় সিঙ্গাপুর সহরে দুজন বাঙ্গালী ডাক্তারের স্থান হবে না? খেপেচ তুমি? আমি ওষুধের দোকান খুলচি, তুমি সেখানে ডাক্তার হয়ে বােসো। দেখাে কি হয় না হয়।
হঠাৎ সুরেশ্বরের মনে হােল তাদের ঘরের বাইরে জানালার কাছে কে যেন একজন ওদের কথা দাঁড়িয়ে শুনচে।
বিমল বল্লে ওকে?
সুরেশ্বর তাড়াতাড়ি দরজার কাছে গিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখলে। তার মনে হল একজন যেন বারান্দার মােড়ে অদৃশ্য হয়ে গেল।
সে ফিরে এসে বল্লে— ও কিছু না, কে একজন গেল।
তারপর ওরা দু’জনে অনেক রাত পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের ভারতীয় পাড়ায়