পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৫১

আমাকে আধ পাউণ্ড (প্রায় এক পোয়া) রুটী ও গো-মাংস দেওয়া হইল। আমি গো-মাংস লইতে অস্বীকার করিলাম। তখন দারোগা আমাকে পথে অন্য জিনিষ খাইবার অনুমতি দিল। ষ্টেশনে অনেক ভারতীয় দরজি দেখিলাম। তাহারাও আমাকে দেখিল, কিন্তু কথা বলা মানা ছিল। আমার পোষাক দেখিয়া তাহাদের চোখে জল আসিল। পোষাক সম্বন্ধে ভাল মন্দ বলার অধিকার ত’ আমার ছিল না, আমি তাই চুপ করিয়াছিলাম। আমি ও দারোগা একটি আলাদা কামরায় উঠিলাম। পাশের গাড়ীতে একজন দরজি ছিল, সে নিজের খাবার হইতে আমাকে কিছু দিল। হেডেলবার্গে মিঃ শোভাভাই পেটেল আসিলেন, ষ্টেশন হইতে তিনি কিছু খাবার আনিয়া দিলেন। যাঁহার নিকট হইতে তিনি খাবার আনিলেন তিনি সত্যাগ্রহের প্রতি সহানুভূতির নিদর্শন স্বরূপ মূল্য নিতে চাহিলেন না, মিঃ শোেভাভাই বিস্তর পীড়াপীড়ি করাতে মূল্য স্বরূপ নাম মাত্র ছয় পেনী লইলেন। মিঃ শোভাভাই ষ্টাণ্ডারটনে টেলিগ্রাম করিয়াছিলেন, তাই অনেক ভারতবাসীই ষ্টেশনে আসিয়াছিলেন। তাঁহারা সঙ্গে খাবার আনিয়াছিলেন, সুতরাং পথে দারোগার ও আমার খাওয়াটা বেশ ভালই। হইয়াছিল।

 বোকসরষ্টে পৌঁছাইতেই মিঃ নঙ্গদী ও মিঃ কাজী আসিলেন। তাঁহারা আমাদের সঙ্গে কিছু দূর গেলেন। একটু তফাতে তফাতে চলিবেন, এই অনুমতি তাঁহারা পাইয়াছিলেন। ষ্টেসন হইতে আবার আমাকে জিনিষ পত্র বহিয়া লইয়া যাইতে হইয়াছিল। খবরের কাগজে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট আলোচনা হয়। বোকসরষ্টে আমাকে আবার আসিতে দেখিয়া ভারতবাসীরা সকলেই খুব সুখী হইলেন। সেই রাত্রে আমাকে মিঃ দাউফ মহম্মদের কুঠুরীতে বন্ধ করা হয়। আমরা দুজনে নিজেদের কথা বলিয়া অনেক রাত্রি কাটাইলাম।