পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
কারাকালিনী

শুইবার ব্যবস্থা জেলের মাঠের মধ্যে ঘরে হইয়াছিল। সুতরাং সে স্থান দেখিতে জেলের চেয়ে বরং লড়াই এর ছাউনীর মত লাগিত। সকলেই সেখানে শুইতে পাইয়া খুসী;—খাওয়ারও খুব সুবিধা। এবারও আগের মত আমাদের উপরেই রাঁধিবার ভার, সুতরাং নিজের রুচি অনুযায়ী খাবার পাওয়া যাইত। সর্ব্বশুদ্ধ ৭৭ জন সত্যাগ্রহী কয়েদী ছিলাম। যাহাকেই যে কাজ দেওয়া হইত, প্রায়ই তাহা সহজ হইত। ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছারীর সম্মুখে পাকা রাস্তা তৈরী করিতে হইবে, তাহার জন্য পাথর, কাঁকর ইত্যাদি খুঁড়িতে ও গাদা করিতে হইত; মাদ্রাসার সামনের ময়দানে ঘাস কাটিতে হইত। সকলেই কিন্তু খুব মনের আনন্দে কাজ করিতেন।

 তিন দিন পর্যন্ত আমি স্পেনটোলীর জমাদারের সঙ্গে কাজ করিতে গিয়াছিলাম, কিন্তু ইহারই মধ্যে টেলিগ্রাম আসিল, আমাকে যেন বাহিরের কাজ করিতে না দেওয়া হয়। মনটা দমিয়া গেল, কারণ বাহিরে যাইতে বেশ আনন্দ লাগিত, শরীর ও স্বাস্থ্য দুইই ভাল বোধ হইত। সাধারণত আমি দুইবার খাই, কিন্তু বোক‍্স‍রষ্ট জেলে কাজ করার জন্য দুইবারের বদলে তিনবার খাওয়ার দরকার হইত। এখন ঝাঁট দেওয়ার কাজ পাওয়া গেল; এই কাজে দিন কষ্টে কাটিত। কিন্তু এ কাজও শেষ হওয়ার সময় আসিল।

বোক‍্স‍রষ্ট হইতে নিষ্কৃতি।

 ২রা মার্চ্চ খবর আসিল, আমায় প্রিটোরিয়ায় পাঠাইবার হুকুম আসিয়াছে। সেই দিনই আমায় প্রস্তুত হইতে হইল। বৃষ্টি পড়িতেছিল— রাস্তাঘাট খারাপ ছিল;—এই অবস্থাতেও আমাকে গাঁঠরী উঠাইয়া