বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৬৯

না সকলেরই ঘিয়ের ব্যবস্থা হয়, ততক্ষণ আমি রুটি খাইতে পারি না। ডাক্তার বললেন, তা হ’লে আর আমাকে দোষ দিও না।

 এবারে কি করি? বড় দারোগা যদি মধ্যে কথা না বলিত, তবে হুকুম পাওয়া যাইত। সেই দিনই আমাকে রুটি ও ভাত দেওয়া হইল ক্ষুধিত ছিলাম, কিন্তু সত্যাগ্রহী হইয়া এ অবস্থায় কি করিয়া খাই? কিছুই খাইলাম না। পরদিন ডিরেক‍্টারের কাছে আবেদন করিবার অনুমতি চাহিলাম। অনুমতি ত’ পাওয়া গেল, তাঁহার কাছে আবেদনও করা হইল। তাহাতে জোহনসবর্গে ও বোক‍্সরষ্টের উদাহরণ দিয়া ঘি পাইবার জন্য প্রার্থনা করিলাম। পনের দিন পরে উত্তর আসিল। যতদিন না ভারতবাসীদের অন্য কোনও রকম খাবারের বন্দোবস্ত হয়, ততদিন আমাকে প্রত্যহ ভাতের সহিত ঘি দেওয়া হইবে। খবরটা প্রথমে আমাকে দেওয়া হয় নাই, তাই প্রথম দিন ত’ ভাত, রুটি, ঘি খুব খাইয়া লইলাম। বলিলাম, রুটির দরকার নাই, কিন্তু উত্তর হইল—ডাক্তারের হুকুম, রুটি দেওয়া হইবেই। পনের দিন ত রুটি খাওয়া গেল। প্রথম দিন মজা করিয়া খাইলাম বটে, কিন্তু পরদিন জানিতে পারিলাম, এই রকম আদেশ দেওয়া হইয়াছে। আমি তখন ভাতের সঙ্গে ঘি ও রুটি লইতে অস্বীকার করিলাম। বড় দারোগাকে বলিলাম, যতক্ষণ না সকলেই ঘি পাইতেছে, ততক্ষণ আমি খাইতে পারি না। কাছে ডেপুটি গবর্ণরও ছিলেন, তিনি বলিলেন,—“তোমার ইচ্ছা।” আবার ডিরেক‍্টরকে লিখিলাম। আমাকে বলা হইয়াছিল, নেটালে যেমন খাবার দেওয়া হয় আমাদেরও তেমনই দেওয়া হইবে। আমি সে বিষয়ে লিখিলাম, এবং শুধু নিজের জন্য হইলে যে ঘি ইত্যাদি লইতে পারি না, তাহাও বলিলাম। শেষে প্রায় দেড় মাস পরে আদেশ আসিল, যেখানে যেখানে ভারতবাসী কয়েদী বেশী আছে, সেখানে ঘি দেওয়া হইবে। এই রূপে দেড় মাস পরে জয়