বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১১৮ ) এবং কৃষ্ণচন্দ্রের বিরুদ্ধাচরণের নিমিত্তই রাজবল্লভের অভীষ্ট কার্য্যে পরিণত হইতে পারে নাই । বিধবা-বিবাহ যে হিন্দুশাস্ত্রানুসারে অসিদ্ধ নছে তাহা এখন অনেকেই স্বীকার করেন। কিন্তু এ কথা বলা যাইতে পারে যে, প্রাচীন আৰ্য্যসমাজে যদিও অল্প পরিমাণে এই প্রথা প্রচলিত ছিল, কালে তাহ। রহিত হইয়া গিয়াছিল। বিধবা-বিবাহের অপ্রচলন দ্বারা হিন্দুসমাজের যৌন-সম্বন্ধীয় পবিত্রতা-রক্ষা হইয়াছে এবং পূজনীয় আৰ্য্যগণ সামাজিক পবিত্রত রক্ষা করিবার উদ্দেশুেই, শাস্ত্রসঙ্গত হইলেও এই প্রথার তাদৃশ পক্ষপাতী ছিলেন না। প্রাচীন আৰ্য্য-সমাজে কোন পুরুষ ও রমণী অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহ-শৃঙ্খলে আবদ্ধ হইত না । সুতরাং বালবৈধব্যের বিষময় ফলও তাহাদিগকে উপভোগ করিতে হয় নাই । বঙ্গদেশে গৌরী দান প্রথা ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালকের বিবাহ প্ৰবৰ্ত্তিত হওয়াতেই সমস্ত অনর্থ সংঘটিত হইতেছে। বোধ হয় এক পুরুষের এক স্ত্রীই জগদীশ্বরের অভিপ্রেত। স্ত্রীজাতির পক্ষে পত্যন্তর গ্রহণ যেমন দোষাবহ, পুরুষের পক্ষেও অন্ত পত্নীগ্রহণ তদপেক্ষা অল্প নিন্দনীয় নহে। যাহারা সমাজসংস্করণে প্রয়ালী, তাহারা বিধবা-বিবাহের প্রচলন বিষয়ে চেষ্টা না করিয়া, বাল্য-বিবাহ ও পুরুষের দ্বিতীয় দার-পরিগ্রহ রহিত করিবার নিমিত্ত আন্দোলন উপস্থিত করিলে সমাজের প্রভূত মঙ্গল সাধিত হইতে পারে। রাজবল্লভের অভীষ্ট কাৰ্য্যে পরিণত না হওয়াস্তু সমাজের মঙ্গল ভিন্ন অমঙ্গল হয় নাই ।