বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( * > ) করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। এই সময় শক্র পক্ষ হইতে এক গোলা আসিয়া সরফরাজের ভবলীল। শেষ করিয়া দিল । গয়াস খী নামক সরফরাজের জনৈক সেনানী তৎকালে প্রাণপণে যুদ্ধ করিতেছিলেন। মহম্মদ আলির যে সৈন্যদল নন্দলাল নামক সেনানী দ্বারা পরিচালিত হইয়াছিল, গয়াস খ ঐ সেনাদলকে পরাভূত করিয়া নন্দলালের জীবন সংহার করিয়াছিলেন । নবাবের নিধন সংবাদ তাহার কর্ণগোচর হইলে তিনি মহম্মদ কুতুব ও মহম্মদ পীর নামক পুত্রদ্ধয়কে আহবান করিয়া বলিলেন, “বৎসগণ আমাদের সমস্ত আশা ভরসা শেষ হইয়াছে, এখন রণক্ষেত্রে জীবন আহুতি ভিন্ন গত্যন্তর নাই ; অতএব চল, প্রাণপণে যুদ্ধ করিয়া মহম্মদ আলির সন্মুখীন হই ।” অনন্তর পিতা ও পুত্রদ্বয় সিংহ-বিক্রমে রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলেন এবং বহুসংখ্যক শত্রুসৈন্তের জীবন সংহার করিয়া একে একে স্ব স্ব জীবন বিসর্জন করিলেন । এই যুদ্ধে বিজয় সিংহ নামক জনৈক রজঃপুত যোদ্ধা নবাব সৈন্তের পশ্চাৎভাগ রক্ষা করিতে গিয়া নিধনপ্রাপ্ত হইয়াছিলেন। জালিম সিংহ নামক ঐ যোদ্ধার নবমবৰ্ষীয় পুত্র তৎসহ রণক্ষেত্রে আগমন করিয়াছিল। পিতা রণক্ষেত্রে নিপতিত হইলে, ঐ বীরবালক সিংছবিক্রমে স্বীয় ক্ষুদ্র তরবারি সঞ্চালন করিয়া পিতার মৃতদেহ যবন-স্পর্শ হইতে রক্ষা করিবার নিমিত্ত নিযুক্ত হইল। মহম্মদ আলি ও তদীয় অনুচরবর্গ ঐস্থলে অগ্রসর হইয়া অবিলম্বে তাহাকে বেষ্টন, করিয়া ফেলিল। কিন্তু জালিম সিংহের সেদিকে অণুমাত্রও ভ্রক্ষেপ ছিল না, বালক ক্রমাগত তরবারি সঞ্চালন করিয়া গর্জন করিতে লাগিল, “যে কেহ এই পবিত্র মৃতদেহ স্পর্শ করিবে, নিশ্চয়ই আমার হস্তে তাহার মস্তক দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন হইবে।” মহম্মদ আলি দূর হইতে এই দৃপ্ত দেখিয়া মুগ্ধ হইলেন এবং অমুচরবর্গকে প্রতিনিবৃত্ত হইবার আদেশ প্রদান করিলেন।