bang labOOKS. in অতসী মামি > と > অশোক শুষ্ক বিষন্ন মুখে ডেকের পাটাতনের দিকে চেযে রইল। মা-ই কেবল মাঝে মাঝে দুএকটা কথা বলতে লাগলেন। পুলিকের এ সমস্ত উচ্চাঙ্গের সুখদুঃখের বালাই নেই, রেলিঙে ভর দিয়ে তন্ময় হয়ে সে ঢেউয়েব ওঠানামা দেখতে লাগল। হঠাৎ উঠে দাঁডিয়ে মা বললেন, তোরা গল্প করা অশোক, আমার ভারী মাথা ধরেছে, কেবিনে একটু ঘুমিয়ে নিই গে। মা উঠে যেতেই অশোকের মুখেব দিকে চেয়ে নেকি হাসল। যেন বলতে চায, রাগ তো তোমার ও নেই আমারও নেই, তবে কথা বলছি না কেন ? চেয়ারটা নেকির কাছে সবিয়ে এনে তার মুখের ওপব ব্যাকুল দৃষ্টি মেলে অশোক বললে, আমায় মাপ করেছ লীলা ? নেকি তেমনিভাবে হেসে বললে, মাপ করবার কিছু নেই, সে সব আমি ভুলে গেছি। তুচ্ছ ব্যাপারকে বড়ো করে দেখবার আর আমার শক্তিও নেই, সময়ও বোধ হয় নেই। অশোকের চোখে জল এল. বললে, আমিই তোমায় শেষ কবে দিলাম। লীলা । নেকি তাড়াতাড়ি বললে, না না, ও কথা বলো না । হঠাৎ আকাশের দিকে আঙুল বাড়িয়ে বললে, কতকগুলো সাদা পাখি কেমন সার বেঁধে চলেছে দ্যাখো । বক তো নয। অশোক দেখলে । বললে, না। বুনোহাঁস। হাসন ? ওমা! এ আবাবা কী রকম হাস। আচ্ছা ওরা দল বেঁধে কোথায় চলেছে ? বেডাতে বেরিয়েছে বুঝি ? অশোক বুঝলে, একেবারে নেকিব পাশে সবে গেল। নেকিব একখানা হাত নিজেব হাতের ভেতর গ্ৰহণ করে বললে, ওদেব তো বাডিঘব নেই, ওরা বেড়িয়েই বেড়ায়। তুচ্ছ কথার অন্তরালে অনাড়ম্বর চেষ্টায় এতদিনের বিচ্ছেদেব সংকোচ মুছে ফেলাই সব চেয়ে সহজ । স৩ি ? বাড়িঘর না থাকা কিন্তু বেশ । না ? বাতাসে একবাশি রুক্ষ চুল নেকির মুখের ওপর এসে পড়েছিল। অশোক সযত্নে চুলগুলো সরিয়ে দিলে। আরামে নেকিব চোখ বুজে এল। নিঃশব্দে অশোকেৰ আঙুলেব মৃদু স্পর্শটুকু সমস্ত মন দিযে উপভোগ কবে চোখ মেলে অশোকের মুখেব দিকে চেয়ে লজিজত সুখেব হাসি হেসে বললে, ঘুম পাচ্ছে, ঘুমেই ? ঘুমোও। নেকির হাতখানি হাতের মুঠোতেই ধরা রইল। নেকির মুখের ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নীল আকাশের বুকে সঞ্চবণশীল শ্বেতচন্দনেব ফোটার মতো গতিশীল বুনোহাঁসগুলোর দিকে চেয়ে রইল। শ্রাবণেব আকাশ, কিন্তু মেঘ নেই। ওপারের অস্পষ্ট তটবেখ্য অস্পষ্ট হয়েই রইল। অশোক মনে মনে বললে, তাই থাক। যে তীর ঘেঁষে চলেছি সেই তীব স্পষ্টতর হোক, উজ্জ্বলতৰ হোক, ওপারের তটরেখা আরও অস্পষ্ট হয়ে মিলিয়ে যাক। মানিক ১ম-১১