বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in 86 Ե- মানিক রচনাসমগ্ৰ আজকালের মধ্যে একবার যাব ভাবছিলাম। আপনার কাছে। - অধিকারী বিস্মিত হইয়া বলিল, বিয়ে করেছ নাকি? বিয়ে তাহলে তুমি করলে? -কথাটা সহজে সে যেন বিশ্বাস করবে না। তারপর গভীর হইয়া বলিল, তাই যদি করলে বাবু, আমার মেয়েটাকে করলে না কেন ? আমার মেয়ে কী দোষ করেছিল শুনি ? কুমুদ চুপ করিয়া রহিল। অধিকারী খানিকক্ষণ একটু অন্যমন হইয়া রহিল। আমন মেয়ে পেতে না কুমুদ। দেখেছ তো বাপু তাকে। বলো তো তুমিই বলো, ও রকম মেয়ে সহজে মেলে। তাকে তোমার তখন মনে ধরল না! পাগল কী বলি সাধে! অনেকক্ষণ বসিয়া অধিকারী অনেক কথা বলিল। একটা বোঝাপড়াও হইয়া গেল কুমুদের সঙ্গে। কুমুদ আবার বিনোদিনী অপেরায় যোগ দিবে। আগাম যে টাকাটা কুমুদ লইয়াছিল সেটা বাতিল হইয়া গেল, বিবাহের যৌতুক বলিয়া ধরিয়া নেওয়া গেল সেটা। কুমুদের সঙ্গে তো আর পারা যাইবে না, অধিকারীর সর্বনাশ না করিয়া সে ছাড়িবে কি! দলটাি আবার ভালো করে গড়ে নিতে হবে কিন্তু বাপু তোমায়, শুধু পার্ট বললে চলবে না। কুমুদ হাসিয়া বলিল, তাই কি চলে? দল ভালো না হলে আমার পার্টও জামবে কেন ? মুখভরা হাসি লইয়া অধিকারী সেদিন বিদায হইল। কুমুদ তো আবার যাত্ৰা করিবে, এ দেশ ও দেশ ঘুরিয়া রাজপুত্র প্রবীর সাজিবে। মতিল কী হইবে ? সে থাকিবে কোথায়? কার কাছে? এ বড়ো সহজ সমস্যার কথা নয়। কিন্তু মতির কোনো ভাবনা চিন্তা আছে বলিয়া মনে হয় না। আনন্দের যে মাদকতায় সে মশগুল হইয়া আছে, ভাবনা চিন্তার ক্ষমতাও যেন তাহাতে ক্ৰমেই লোপ পাইয়া আসিতেছে। কুমুদ শেষে কথা তুলিল। বলিল, আমি যখন যাত্রা করতে যাব, তুমি কোথায় থাকবে মতি ? মতি ঘাড় কাত করিয়া বলিল, তুমিই বল না? १९६क्रिश शांत? গাওদিয়া ?’ মতির যেন চমক লাগে। গাওদিয়ার কথা মন হইতে মুছিয়া ফেলিবার আদেশ যে দিয়াছিল, সে আবার যাচিয়া সেখানে যাওয়ার কথা বলিতেছে! কুমুদের চোখে মতি চোখ মেলায়। কী খোজে মতি কুমুদের চােখে? পলিকে পলকে কুমুদ খোলস বদলায়, আজ যা বলে কাল তা বাতিল করিয়া দেয়, তবু কী তার মধ্যে এমন একটা অপরিবর্তনীয়তা থাকা সম্ভব যার মৌলিকতা মতির মতো মেয়েকেও বিহ্বল করিযা দেয় ? গাওদিয়া যেতে বলছ? তাই থাকো গিয়ে কমাস। আমি এদিকটা একটু গুছিয়েনি। कँको शृgछाहत ? খুবই সুবিবেচনার কথা। তবু শুনিয়া মতির যেন কষ্ট হয়। এ ধরনের কথা কি মানায় কুমুদের মুখে? তিনমাস আগেও হয়তো কুমুদকে হিসাবি বিবেচক দেখিলে মতি খুশি হইত। এখন আর সে তা চায় না। তেমনই কুমুদই তার ভালো, যে বড়ো বড়ো কথা বলে, কাজের বদলে শূইয়া থাকে, ভালোবাসে। তবু পা টেপায়। কুমুদ বলে, এসে নিয়ে যাবার জন্য তোমার দাদাকে একখানা চিঠি লিখে দাও মতি। তুমি লেখো না ?