>88 মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ দেবীপ্রসাদ বলিলেন : তাই বা কি করিয়া হইবে ? এখন অন্যথা করিতে পারে এমন সাধ্য কাব ? সা গোলাম বলিলেন : কেন সে তো কোম্পানীর ঘরে জানিতে হয় নাই, কোন হাকিমের নিকটও আজ পর্য্যস্ত উপস্থিত করিয়া কোনরূপ সহি করান হয় নাই। ঘরাও দলিল, ঘরাও লিখাপড়া। তাতে আছে কি ? আপনারই তো পিতার হাতের লেখা । আপনার হাতের লেখা হইলে ক্ষতি কি ? যেসকল সাক্ষী আছে, তাহাদের দ্বারা সাক্ষী-শ্রেণীতে নাম লেখাইতে কতক্ষণের কাজ ? দেবীপ্রসাদ বলিলেন : মার এব্রাহিম হোসেনের দস্তখতের কি হইবে ? সা গোলাম বলিলেন : সে ভাবনা ভাবিতে হইবে না। সে ভার আমার প্রতি । দেবীপ্রসাদ বলিলেন : ভার আপনার প্রতিই থাক, গড়িয়া উঠিতে পারিলে হয় । ইহাব জন্য সময চাই—গোপন চাই, ছদ্মবেশী হওয়া চাই কপটতা শিক্ষা করা চাই—বিশেষ পরিশ্রম এবং উদ্যোগী হওয়া চাই । স। গোলাম বলিলেন : সে আপনাকে বলিতে হইবে না, বহুকাল হইতে শিক্ষা আছে । আমি না পারি জগতে এমন কোন কাৰ্য্য নাই । সংসার চালাইতে আমি ভাল জানি—সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য করিতে আমার বেশী সময় আবশ্যক করে না । ধৰ্ম্মভয়আমার অতি কম । দেবীপ্রসাদ বলিলেন : ভালই তো, ভয় যত কম থাকে ততই ভাল। কিন্তু ধৰ্ম্মভয় একটু থাকিলে যেন ভাল হয়। যাহাই বলুন আর যাহাই করুন, কিন্তু অছিয়তনামা আগে হস্তগত করিতে না পারিলে আর কোন আশা নাই। আপনি বলেন সন্ধান করিয়াছেন, কিন্তু আমার বিশ্বাস হয় না। অছিয়তনামার বিষয় মীরসাহেব ভিন্ন অন্তকেহই জানে না। জানিবার সম্ভাবনাও নাই । সী গোলাম বলিলেন : সে বিষয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন, সন্ধান করিতে আমি কম করি নাই। শীঘ্রই সফল হইব—কোন চিন্তা করিবেন না । দেবীপ্রসাদের বাটির পূৰ্ব্বদিকে বড় রাস্তা । গ্রামের, ভিন্ন গ্রামের ও অন্য স্থানের লোকজন ঐ পথে চলাচল করে ‘চৌকিদার চৌকিদার” বলিয়া একটি লোক ডাক ছাড়িয়া উঠিল ।