পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
ক্ষেত্র

লক্ষ্মী পদার্পণ করবেন, এজন্য মনের উল্লাসে তাঁহারা সকাল গৃহের দ্বারদেশে দেবীর পদাঙ্ক, পেচকমূর্ত্তি ও ধান্যশীর্ষ অঙ্কিত করিয়া চিত্রবিদ্যায় নৈপুণ্য প্রকাশ করিতে ব্যস্ত। বর্ষিয়সী গৃহিণীগণ নৈবেদ্য রচনায় নিযুক্তা। চিড়া, মুড়ি, মুড়কি, খই, মোয়া, লাড়ু, নারিকেলজাত বিবিধ মিষ্টান্ন ও সন্দেশ প্রভৃতি “রচনা” দ্বারা আজ গৃহ পরিপূর্ণ। বাড়ীর “সেকেলে” কর্ত্তাগণ লক্ষ্মীর আহ্বান শ্রবণের জন্য উৎকর্ণ হইয়া তাঁহার আগমন প্রতীক্ষায় রাত্রি জাগরণ পূর্ব্বক নিশি পোহাইতেছেন। তন্দ্রা নিবারণের জন্য ঘন ঘন তামাক সেবন ও অক্ষক্রীড়া করিতেছেন। আজ পূর্ণিমা নিশীথে লক্ষ্মী বরদাত্রী হইয়া ঝাঁপিকক্ষে দ্বারে দ্বারে বিচরণ করিয়া ধনরত্ন বিতরণ করিতেছেন। তিনি সকলকে আহ্বান করিয়া বলিতেছেন “তোমরা কে জেগে আছ, শীঘ্র এস, এই ধন লও। আমি অপেক্ষা করিতে পারি না, আমার আজ রাত্রে সমস্ত পৃথিবী পর্যাটন করিতে হইবে।”

নিশীথে বরদালক্ষ্মীঃ কো জাগর্ত্তীতি ভাষিণী।
নারিকেলোদকং পীত্বা অক্ষৈর্জ্জাগরণং নিশি।
তস্মৈ বিত্তং প্রযচ্ছামি কো জাগর্ত্তি মহীতলে॥

 কো জগির্ত্তি? ইহা হইতেই নাম “কোজাগরি”।


ক্ষেত্র ব্রত।

 এই ব্রত অগ্রহায়ণ মাসের শুক্ল পক্ষের প্রথম শনিবারে অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। পশ্চাদুক্ত “বুড়াঠাকুরাণীর ব্রত”ও এই। শনিবারে করিতে হয়।