( ৯ )
ভাগ্যচক্রের পরিবর্তন
ঘুম থাকা উঠ্যা বিনোদ মায়ের আগে কয়।
“গিরে[১] বস্যা উচিত মা থাকতে নাহি হয়॥
কামাই রোজগার নাই ঘরে নাই ভাত।
এমন করিয়া কেমনে রইব কুলজাত॥
বিদায় দেও মা জননী বলি তোমার আগে।
বৈদেশ যাইতে তোমার পুত্র বিদায় যে মাগে॥”
ঘরে আছিল পানিভাত বাইরা[২] দিল মায়।
কাচালঙ্কা দিয়া বিনোদ কিছু কিছু খায়॥
মায়ের পায়ের ধূলা বিনোদ তুল্যা লইল শিরে।
বৈদেশে যাইতে বিনোদ পথে মেলা করে॥
কুড়া শীগারী বিনোদ পিজরা নইল হাতে।
এক বারে উতরিল সরাইয়ের[৩] পথে॥
বৈদেশেতে যায় যাদু যদ্দুর দেখা যায়।
পিছন থাকা চাইয়া দেখে অভাগিনী মায়॥
বাঁশের ঝাড় বনজঙ্গলে পুতের পিষ্ঠে পড়ে।
আখির পানি মুছ্যা মায় ফিরা আইল ঘরে॥
এক মাস দুই মাস তিন মাস যায়।
ছয় সাত আট করি বছর গোয়ায়॥
“কি কর বিনোদের মাও কি কর বসিয়া।
তোমার পুত্র বিনোদ আইল দেখ বাইর হইয়া॥
আইসাছে তোমার যাদু দুই আখির তারা।”
ডাক শুনিয়া পাগল মাও পন্থে হইল খাড়া॥
দেখিয়। পুত্রের মুখ এক বছর পরে।
অভাগী দুঃখিনী মায়ের দুই নয়ান ঝুরে॥