সেও খানি বেচে কিনা ভাবে মনে মন।
“গাছের তলাতে রইবাম করিয়া শয়ন॥
আমি রইলাম গাছের তলায় তাতে ক্ষতি নাই।
প্রাণের দোসর মলুয়ারে রাখি কোন ঠাই॥
বুড়াকালে মাও মোর বড় পাইল দুঃখ।
উবাসে কাবাসে তার শুখাইল মুখ॥”
এক দিন কয় বিনোদ মলুয়ারে চাইয়া[১]।
“বাপের বাড়ীত যাও তুমি মায়েরে লইয়॥৷
পঞ্চ ভাইয়ের বইন তুমি দুঃখ নাহি জান।
ফুলছিট্কি[২] নাহি সয় তোমার পরাণ॥
ভালা কাপড় ভালা চোপর উবাস[৩] নাহি জান।
কেমন কইরা অত দুঃখ সহিবে পরাণ॥
মাও আছে বাপ আছে আছে সোদর ভাই।
ভালবাস্যা রইবে তুমি তাহাদের ঠাই॥
কড়ার ভিখারী আমি রইবাম গাছের তলে।
অত দুঃখ তোমার নাহি সহিবে শরীলে[৪]॥”
শুনিয়া মলুয়া তবে কহিতে লাগিল।
“বাপের বাড়ীর যত সুখ বিয়া হইতেই গেল॥
বনে থাক ছনে থাক গাছের তলায়।
তুমি বিনে মলুয়ার নাহিক উপায়॥
সাত দিনের উপাস যদি তোমার মুখ চাইয়া।
বড় সুখ পাইবাম তোমার চন্নামির্তি[৫] খাইয়া॥
রাজার হালে থাকে যদি আমার বাপের বাড়ী।
মলুয়া নহেত সেই সুখের আশারী[৬]॥
শাৰভাত খাই যদি গাছতলায় থাকি।
দিনের শেষে দেখলে মুখ হইবাম সুখি॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মৈমনসিংহ-গীতিকা