“গত হইয়া গেছে দিন আরত নাই বাকী।
কিসের লাইগ্যা সংসারে কাজ আর বা কেন থাকি॥
আমি নারী থাক্তে তোমার কলঙ্ক না যাবে।
জ্ঞাতি বন্ধু জনে তোমায় সদাই ঘাটিবে[১]॥
কলঙ্কজীবন মোর ভালাইব সাগরে।
এখান হইতে সোয়ামী মোর চইল্যা যাও ঘরে॥
ঘরে আছে সুন্দর নারী তার মুখ চাইয়া৷
সুখে কর গির-বাস[২] তাহারে লইয়া॥
উঠুক উঠুক উঠুক পানি ডুবুক ভাঙ্গা নাও।
অভাগারে রাইখ্যা তুমি আপন ঘরে যাও॥
বাতা বাইয়া উঠুক পানি মাইজ-দরিয়ার কোলে।”
জ্ঞাতি বন্ধু জনে কন্যা ডাক দিয়া বলে॥
“বড় দোষের দোষী যেই সেও যায় চলি।
খোটা উষ্ঠা যত দোষ আমার সকলি।
কপালে আছিল দুঃখ না যায় খণ্ডনে।
কোন দোষের দোষী নয় আমার সোয়ামী॥”
“শুনগো শাশুড়ী মোর শত জন্মের মাও।
এইখানে থাইক্যা পন্নাম আমি জানাই তোমার পাও॥”
সুন্দরী মলুয়া কয় সতীনে ডাকিয়া।
“সুখে কর গির-বাস সোয়ামী লইয়া॥
আজি হইতে না দেখিবা মনুয়ার মুখ।
আমার দুঃখ পাশরিবা দেইখ্যা স্বামীর মুখ॥”
পূবেতে উঠিল ঝড় গর্জিয়া উঠে দেওয়া।
এই সাগরের কূল নাই ঘাটে নাই খেওয়া॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মলুয়া
৯৯