এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রাবতী
১০৫
( ৩ )
পত্র দেওয়া
আবে করে ঝিলিমিলি সোণার বরণ ঢাকা।
প্রভাতকালে আইল অরুণ গায়ে হলুদ মাখা॥[১]
হাতেতে ফুলের সাজি কন্যা চন্দ্রাবতী।
পুষ্প তুলিতে যায় পোষাইয়া[২] রাতি॥
আগে তুলে রক্তজবা শিবেরে পুজিতে।
পরে তুলে মালতীফুল মালা না[৩] গাঁথিতে[৪]॥
হেনকালে নাগর আরে কোন কাম করে।
পুষ্পপাতে লইয়া পত্র কন্যার গোচরে।
“ফুল তুল ডাল ভাঙ্গ কন্যা আমার কথা ধর।
পরেত তুলিবা ফুল চম্পা-নাগেশ্বর॥”
“পুষ্প তোলা হইল শেষ বেলা হইল ভারি।
পূবেত হইল বেলা দণ্ড তিন চারি॥
আমারে বিদায় কর না পারি থাকিতে।
বসিয়া আছেন পিতা শিবেরে পূজিতে॥”
“আজিত বিদায় লো কন্যা জনমের মত।”
চন্দ্রার হাতে দিল আরে সেই পুষ্পপাত॥
পত্র নাইসে[৫] নিয়া কন্যা কোন কাম করে।
সেইক্ষণ চল্যা গেল আপন বাসরে॥ ১-১৮
14—1918 B.T.
- ↑ আবে---মাখা=অরুণদেবের স্বর্ণ বর্ণ অভ্র (মেষ) ভেদ করিয়া ঝিলিমিলি করিতেছে—তিনি হলুদ দ্বারা স্নাত হইয়া উদিত হইয়াছেন (বিবাহের সময়ে বর-কন্যারা হলুদ দ্বারা স্নাত হন)।
- ↑ পোষাইয়া=পোহাইয়া।
- ↑ না =অর্থশূন্য। বরঞ্চ ‘হাঁ’ অর্থে ব্যবহৃত, কথাটার উপর জোর দেওয়ার জন্য ‘না’ প্রযুক্ত হইয়া থাকে।
- ↑ মালা না গাঁথিতে=মালা গাঁথিবার জন্য।
- ↑ পত্র নাইসে =পত্র হাতে লইয়া। নাইসে—নিরর্থ শব্দ “পত্র না লইয়া কন্যা কোন্ কাম করে” এই অর্থেই “পত্র নাইসে লইয়া কন্যা” ইত্যাদি ব্যবহৃত। ‘না’, ‘নাই’ প্রভৃতি শব্দগুলি অনেক সময় শুধু গানে ধুয়া টানিবার জন্য কিংবা পাদপুরণার্থ ব্যবহৃত হইয়াছে।