বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চন্দ্রাবতী
১১১

আগে চলে কন্যার মায় ডালা মাথায় লইয়া।
তার পাছে কন্যার খুড়ি নোটা হাতে লইয়া॥
তার পরে যত নারী গীত জুকারে।
সোহাগ মাগিল কত বাড়ী বাড়ী ফিরে॥১—৩৪


( ৯ )

মুসলমান কন্যার সঙ্গে জয়চন্দ্রের ভাব

পরথমে হইল দেখা সুন্ধা নদীর কূলে।
জল ভরিতে যায় কন্যা কলসী কাকালে॥
চলনে খঞ্জন নাচে বলনে[১] কুকিলা।
জলের ঘাটে গেলে কন্যা জলের ঘাট লালা॥
“কে তুমি সুন্দরী কন্যা জলের ঘাটে যাও।
আমি অধমের পানে বারেক ফিরা চাও॥
নিতি নিতি দেখ্যা তোমায় না মিটে পিয়াস।
প্রাণের কথা কও কন্যা মিটাও মনের আশ॥
পরকাশ কইরা কইতে নারি মনের কথা ধর।
তুমি কন্যা এই জগতে প্রাণের দোসর॥”

সরমে মরণ আইল কথা কওয়া দায়।
জলের ঘাটে গিয়া নাগর উকিজুকি চায়॥
লিখিয়া রাখিল পত্র ইজল[২] গাছের মূলে।
এইখানে পড়িব কন্যা নয়ন ফিরাইলে॥
"সাক্ষী হইও ইজল গাছ নদীর কুলে বাসা।
তোমার কাছে কইয়া গেলাম মনের যত আশা॥
এইখান আসিব কন্যা সুন্দর আকার।
এই পত্র দেখাইও আমার সমাচার॥
অন্ধকারের সাক্ষী তোমরা চান্দ আর ভানু।
এইখানে আসিবে কন্যা সোনার বরণ তনু॥
সোনার বরণ তনু কন্যা চম্পকবরণী।
তার কাছে কইও আমার দুঃখের কাহিনী॥

  1. বলনে=কণ্ঠস্বরে।
  2. ইজল=হিজল।