বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৬
মৈমনসিংহ-গীতিকা

একমুষ্টি ধান্য নাহি গৃহস্থের ঘরে।
অনাহারে পথে ঘাটে যত লোক মরে॥
আগেত বৃক্ষের ফল করিল ভোজন।
তাহার পরে গাছের পাতা করিল ভক্ষণ॥
পরেত ঘাসেতে নাহি হইল কুলান।
ক্ষুধায় কাতর হৈল যত লোকজন॥
গরুবাছুর বেচিয়া খাইল খাইল হালিধান[১]
স্ত্রী পুত্ত্র বেচে নাহি গো গণে কুলমান॥
পরমাদ ভাবিল মাতুল কেমনে বাচে প্রাণ।
কেনারামে বেচল লইয়া পাঁচ কাঠা ধান॥ ১—৫২


(৩)

দস্যুদলে প্রবেশ

হালুয়া কিনিয়া পরে গো লইয়া কেনারামে।
হরষ অন্তরে গেলা আপন মোকামে॥
হালুয়ার সাত পুত্ত্র গো ডাকাইতের সর্দ্দার।
ডাকাতি করিয়া কৈল দৌলত বিস্তর॥
গারুয়া পাহাড়[২] হৈতে দক্ষিণ সাগর।
ঘরবাড়ী নাহি কেবল নল খাগড়ার গড়॥
বনেতে লুকাইয়। যত ডাকাতিয়াগণ।
পথিক ধরিয়া মারে ধনের কারণ॥
টাকা পয়সা রাখে লোকে মাটীতে পুতিয়া।
ডাকাতে কারিয়া লয় গামছা মুড়া দিয়া॥
ডাকাতে দেশের রাজা বাদশায় না মানে।
উজার হইন রাজ্য কাজীর শাসনে॥

  1. হালিধান=শালিধান্য, অথবা হালের দ্বারা যে ধান্য উৎপন্ন করা হইয়াছে।
  2. গারুয়া-পাহাড়=গাড়ো পাহাড়।