তোমারে জিনিতে পদ্মার হইয়াছে সাধ।
পদ্মারে জিনিয়া আমি ঘুচাইব বিবাদ॥”
পদ্মারে জিনিবে গুনি হাস্য হইল তার।
আজ্ঞা দিল কলা কাটি ভেলা বান্ধিবার॥
কহ কলাগাছ তব আনি সব কেটে।
দাসগণ লয়ে যাব গুঞ্জরীর ঘাটে॥
দুই কুড়ি কলাগাছ ডাঙ্গর[১] ভেলা বান্ধে।
মধ্যে মধ্যে খিল দিল সুন্দি বেতে[২]র ছান্দে॥
চারি ধারে খুটী তার গড়িল গজারি[৩]।
উপরে বান্ধিল ঘর চৌচালা করি॥
চারি ধারে বেড়া বান্ধি রাখিল দুয়ার।
বিছানা করিল তাতে নেতের কান্থার[৪]।
মরার লক্ষণ দিল উপরে গৃধিনী।
চারিদিকে বসাইল চারটী শকুনী॥
রাঙ্গা কুকুড়া দিল শ্বেত বিড়াল আর।
ইহাদের জন্য দিল ছয়মাসের আহার॥
এহি মত ভেলা খান দেখিতে সুন্দর।
বসন্ত কালেতে যেন কামটুঙ্গী[৫] ঘর॥
ভেলা বান্ধি দাসগণে সত্বরে দিল জান।
ঘাটেতে আনিয়া মরা করাইল স্নান॥
সুগন্ধি চন্দন দিল সর্বাঙ্গে লেপিয়া।
বিচিত্র বিছানা দিল ভেলাতে তুলিয়া॥
কাছার ভিতরে মরা বস্ত্রে ঢাকি এরি[৬]।
বিদায় মাগে বেহুলা শ্বশুরের পায়ে পড়ি॥
“দেবপুরে যাই মাগো বিদায় দেহ মোরে।
আশীর্ব্বাদ কইর যেন পুন আসি ঘরে॥”
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৮৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দস্যু কেনারামের পালা
২৩১