নদীর ঘাটে গেলে কন্যা জ্বলে নদীর পানি।
লীলারে দেখিয়া বান্দে[১] সাউদের[২] তরণী॥
পুষ্প না বাগানে কন্যা পুষ্প তুলতে যায়।
মৈলান[৩] হইয়া ফুল পাতাতে লুকায়॥
চাদমুখ দেখিয়া চান্দ আন্ধাইরেতে লুকে[৪]।
পন্থের পথিক লীলার মুখ চাইয়া দেখে॥
কি কব সে রূপের কথা কইতে নাহি পারি।
চন্দ্রের সমান রূপ দেখিতে অপ্সরী॥
সুন্দর বদন লীলার ফোটা পদ্মফুল।
হাটিয়া যাইতে লীলার মাটীত পরে চুল॥
চাচর চিকণ কেশ লীলার বাতাসেতে উড়ে।
বর্ষাতিয়া[৫] চান্দে যেমন ক্ষণে আবে[৬] ঘিরে॥
উপরে যোর ভুরু নীচে নয়ানতারা।
মধুলোভে পুষ্পে যেমন বৈসাছে ভমরা॥
কাল কাজলে রাঙ্গা তার দুটী পাশে।
বর্ষাকাল্যা তারা যেমন মেঘের উপর ভাসে॥
ডালিমের ফুল যেমন বাতাসেতে উড়ে।
সিন্দুর মাখিয়া কন্যার দিয়াছে অধরে॥
তাহাতে খেলার হাসি না দেখে কোন জন।
সরমে ঢাকয়ে কন্যা আপন যৌবন॥
তার মধ্যে দত্ত লীলার নাহি যায় দেখা।
দুর্লভ মুকুতা যেমন ঝিনুর মধ্যে ঢাকা॥[৭]
মুষ্টিতে আটয়ে লীলার চিকণ কাকালী[৮]।
হাটিয়া যাইতে কন্যার যৈবন পরে ঢলি॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কঙ্ক ও লীলা
২৭১