ভাবিতে ভাবিতে লীলা যায় যে চলিয়া।
কহিতে লাগিল গর্গ পশ্চাতে ভাকিয়া॥
“শুন কন্যা লীলাবতী আমার বচন।
আমিই আনিব জল দেবের কারণ॥[১]
কলসী রাখিয়া তুমি যাও ফিরি ঘরে।
দেবের নৈবেদ্য মোর খাইল কুকুরে॥”
পিতার আদেশে নীলা বাড়ীতে ফিরিল।
কলসী লইয়া গর্গ ঘাটেতে চলিল॥
লেপিয়া পুছিয়া ঘর পবিত্র করিয়া।
লীলার হস্তে তুলা ফুল দিল ফালাইয়া॥[২]
সিংহাসন শালগ্রাম সকলি ধুইল।
সিনান করিয়। তবে পূজায় বসিল॥
দেব-পূজা করি গর্গ পবিত্র মন্দিরে।
বিশ্রাম করিয়া গেল ভোজন আগারে॥
প্রতিদিন পূজা কার্য্য সমাপন করি।
লীলায় ডাকিয়া কহে অতি তাড়াতাড়ি॥
নিজ হস্তে নীলা গর্গে করায় ভোজন।
আজি নাহি ডাকে লীনায় কিসের কারণ॥
কঙ্কের লাগিয়া ভাত লীলা যত্ন করে।
টানাইয়া রাখে নীলা কাগমলা[৩] উপরে॥
চকিত হইয়া গর্গ চারিদিকে চায়।
মানুষ জন কিছু নাহি দেখিবারে পায়॥
কৌটা খুলি কালজর[৪] অন্নে মিশাইলা।
গোপনে থাকিয়া লীলা সকলি দেখিলা॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭২
মৈমনসিংহ গীতিকা