বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কঙ্ক ও লীলা
২৮৫

শুন দেবী লীলাবতী আমার বচন।
কিছুদিন করিব আমি তীর্থে তে ভ্রমণ॥

“রাখিও পিতারে তব অতি যত্ন করে।
ভ্রম দূর হলে পিতার আসিব পুন ঘরে॥
অপরাধযোগ্য কার্য্য কিছুই না জানি।
সাক্ষী আছে চন্দ্রসূর্য্য দিবসরজনী॥
মনে করি বনে করি যত অনাচার।
দেবতা-ধরা দেখ সাক্ষী হয়রে তার॥
মেলানি মাগিয়ে[১] কঙ্ক লীলা তোমার কাছে।
আবার হইবে দেখা প্রাণে যদি বাচে॥
কিছুকাল ধরে লীলা তুমি রহ একাকিনী।
সুরভি পাটলী তোমার রহিল সঙ্গিনী॥

“ঘরে আছে পোষারে পাখী হীরামণ শারী।
তাহারে ডাকিও রে লীলা ‘কঙ্ক’ নাম ধরি॥
নাহি মাতা নাহি রে পিতা আমার নাহি বন্ধু-ভাই।
যে দিকে কপালে নেয় তথি চইলে যাই॥
আর এক কহিব লীলা গো আমার নিবেদন।
অভাগা বলিয়া কঙ্কে রাখিও স্মরণ॥

“রৈল রৈল লীলা তোমার তোতা শারী।
ক্ষীর-সর দিয়। তারে পালিও যত্ন করি॥
রইল রইল রে লীলা পুষ্প-তরু যত।
জলসেচন দিয়া পালিও অবিরত॥
রইল রইল রে লীলা মালতীর লতা।
আজি হতে রইল পইরা তোমার মালা গাঁথা॥
সুরভি পাটলী রইল রে লীলা প্রাণের দোসর।
তৃণ জল দিয়া সবে করিও আদর॥

  1. মেলানি নাগা=যাত্রাকালে বিদায় লওয়া।