বন দেবী আঁকে কন্যা সেওরার[১] বনে।
রক্ষাকালী আঁকে কন্যা রাখিতে ভুবনে॥
কার্ত্তিক গণেশ আঁকে কন্যা সহিত বাহনে।
রাম সীতা আঁকে কন্যা সহিত লক্ষ্মণে॥
গঙ্গা গোদাবরী আঁকে হিমালয় পর্ব্বত।
ইন্দ্র যম আঁকে কন্যা পুষ্পকের রথ॥
সমুদ্র সাগর আঁকে চান্দ আর সূরুষে।
ভাঙ্গা মন্দির আঁকে কন্যা জঙ্গলার মাঝে॥
শেজেতে শুইয়া আছে মরা সে কুমার।
কেবল নাই সে আঁকে কন্যা ছবি আপনার॥
সূইচ রাজার ছবি আঁকে পাত্রমিত্র লইয়া।
নিজেরে না তাঁকে কন্যা রাখে ভাড়াইয়া॥
আলিপনা আঁইক্যা কন্যা জ্বালে ঘির্তের বাতি।
ভূমিতে লুটাইয়া কন্যা করিল পন্নতি[২]॥
(১৭)
নকল রাণীর আলেপনা দেখিয়া রাজা, বন্ধু এবং পাত্রমিত্রসহ কাজলরেখার আলেপনা দেখিতে উপস্থিত হইল।
তখন কাজলরেখার আলেপনা দেইখ্যা পাত্রমিত্র সকল এবং রাজাও নিজে ঠিক কর্ল যে এ নিশ্চয়ই কোন ভদ্রবংশের কন্যা। এই রকম কইরা নানান রকম পরীক্ষা চল্তে লাগ্ল। এদিকে কন্যা শুকপক্ষীর কাছে কাইন্দ্যা বাপ-ভাইয়ের কথা এবং তার দুঃখ কবে খণ্ডিব[৩] সেই সব কথা জিজ্ঞাসা করে।
গান—
‘‘কও কও শুকপংখীরে পূর্ব্বের বিবরণ।
ঘরে মোর বাপ-মাও আছে বা কেমন॥
দশ বচ্ছর গোঁয়াইলাম পাইরা নানান দুঃখ।
একদিন না দেখিলাম মা-বাপের মুখ॥