সাক্ষী থাক্য[১] কিতাব কোরাণ আরে সাক্ষী যে তোমরা।
আলাল দুলালের লক্ষ্য নাই সে তুমি ছাড়া॥
সাক্ষী অইয়ো[২] নদী নালা জঙ্গলা পাহাড়ী[৩]।
বনের না পইখ পাখালী আমি তারে সাক্ষী করি॥
আমিত আভাগী মাও আরে যাইরে ছাড়িয়া।
কোলের ছাওয়াল শিশুরে নেও কোলেতে তুলিয়া॥”
কান্দিতে কান্দিতে মায়ের চক্ষে পড়ে কালি।
টান দিয়া বুকে লইল “পুত্র পুত্র” বলি॥
“সোনার কলি আলাল দুলাল আর তারার দিকে চাইয়া।
আমার মাথা খাও পিয়া আর নাই সে কর বিয়া॥
সতীন বালাই কিয়া কই তোমার কাছে।
এতিম[৪] ধনেরা মোর দুঃখু পাইব পাছে॥
সতীনের ছাওয়াল কাঁটা সতাই মায়ে লাগে।
সেই না কাঁটা তুলে সতাই সগলের[৫] আগে॥
শুন শুন পরাণের পতি মোর কথা রইয়া।
সতাইয়ের গল্প এক শুন মন দিয়া॥
‘দীঘির দক্ষিণ পাড়ে আরে দারাক[৬] গাছের ডালে।
কইতরা কইতরী[৭] দুই থাকে তার খোরলে[৮]॥
চিত্তসুখে নিত্যি তারা প্রেম আলাপনে।
সুখে দিন যায় তারার[৯] দুঃখু নাই সে জানে॥
এই না মতে কতদিন যায়রে চলিয়া।
দুই ডিম রাখ্যা কইতরী গেলরে মরিয়া॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪১২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৫২
মৈমনসিংহ-গীতিকা