“না দিব না দিব পরাণ আরও দেখি শুনি[১]।
জঙ্গলার মধ্যে কার কাতর পরাণি॥”
ভাঙ্গা মন্দিরের মাঝে সাপে করে বাসা।
সন্ধ্যাবেলা যায় কন্যা রাইত থাকবার আশা॥
শুকাইয়া গেছে মাংস পইড়া রইছে হাড়।
মন্দিরের মাঝে দেখে কন্যা মড়ার আকার॥
চিনিতে না পারে কন্যা সুন্দর বয়ান।
লক্ষিয়া দেখিল কন্যা এই ঠাকুর নদ্যার চান্॥
শিরে বান্দা জটা চুল লম্বা মুছ[২] দাড়ি।
আইল সন্ন্যাসী এক হাতে লইয়া খড়ি[৩]॥
কন্যা দেখি সন্ন্যাসী যে ভাবে মনে মন।
এ কোন বিধির কাম ঘটিল এমন॥
“শুন শুন কন্যা আরে বলি যে তোমারে।
কোন দেশ ছাড়িয়া তুমি আইলা এমন দূরে॥
কোন বা রাজার কন্যা দিলা বনবাসে।
কিবা পাপ কইরা ছিলা নবীন বয়সে॥
কঠিন তোমার মাতাপিতা শানে বান্দা হিয়া।
প্রাণে কেমনে বাইচা আছে তোমারে বনে দিয়া॥”
(আরে ভালা) এই কথা শুনিয়া কন্যা কি কাম করিল।
সন্ন্যাসীর পায় ধরি কান্দিতে লাগিল।
হিঙ্গলা পিঙ্গলা জটা কটা মুছ দাড়ি[৪]।
সন্ন্যাসীর পায় কন্যা যায় গড়াগড়ি॥
আগগুড়ি[৫] যত কথা জানায় সন্ন্যাসীরে।
শুনিয়া সন্ন্যাসী তবে লাগে কইবারে॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
মৈমনসিংহ-গীতিকা