পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯২ যশোহর-খুলনার ইতিহাস ভাগীরথীতীরে ত্রিবেণী পৰ্য্যন্ত এবং উত্তরে কপোতাক্ষী ও ইছামতী পথে বহুদূর পৰ্য্যন্ত নানাবিধ কুলীন, বংশজ ও মৌলিক কায়স্থ, বৈদিক রাঢ়ী ও কুলীন শ্রোত্রিয় প্রভৃতি নানাবিধ ব্রাহ্মণ এবং বঙ্গজ ও রাঢ়ীয় বৈষ্ঠ প্রভৃতি জাতি যশোহর-খুলনার সমাজ-দেহের প্রধান অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হইয়া রহিয়াছেন। মুকুন্দপুরের পশ্চিমদিকে ক্ষুদ্র কালিনীর অপর পারে যেখানে পূৰ্ব্বদেশীয় সামাজিকগণ প্রথম বসতি করেন, তাহাকে এখনও "বাঙ্গালপাড়া” বলে ; প্রাচীন ম্যাপে বাঙ্গালপাড়া বেশ বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল। বাঙ্গালপাড়া ও বাকড়া প্রভৃতি স্থান হইতে সামাজিকগণ ক্রমে উত্তরদিকে গিয়া বসতি করিয়াছিলেন। এইরূপে পৃথক্ভাবে বসস্তুরায় যে একটি সমাজ প্রতিষ্ঠিত করিলেন উহার নাম হইল,—“যশোহর-সমাজ”। এ সমাজ এখনও আছে ; যশোর-রাজ্য নাই, কিন্তু যশোহর-সমাজ প্রতিপত্তি-শূন্ত হয় নাই। মহারাজ বিক্রমাদিত্য ছিলেন যশোহর -সমাজের সমাজপতি। বিশেষ ক্ষমতা ও দ্যায়পরতার সহিত ইহার সামাজিক শাসন চলিতে লাগিল। আজ সে শাসন নাই, বন্ধন অনেক শিথিল হইয়াছে ; কিন্তু যশোহর-সমাজের নাম আছে, খ্যাতি সন্মান আছে, আরও আছে এবং তাহ সহজে যাইবে না—ইহার বংশ-বিশুদ্ধি। এখনও এই সমাজের লোকের বাকৃল প্রভৃতি স্থানের সামাজিকের সহিত বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেন না। যাবতীয় সামাজিক বিষয়ের মীমাংসার জন্ত সামাজিকগণ সময় সময় সমবেত হইতেন ; তজ্জন্ত সমাজগৃহ বা মিলন-মন্দির ছিল। আমরা পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি, মুকুন্দপুরের সন্নিকটে ধামরাইল বা ডামরেলী পরগণার অন্তর্গত মুস্তাফাপুর গ্রামে কালিনী-তীরে একটি বিরাট নবরত্ন মন্দিরের ভগ্নাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায়। ইছাপুরের হোড়চৌধুরীগণের নবরত্ন মন্দির ব্যতীত যশোহর-খুলনার মধ্যে এত বড় নবরত্ন মন্দির আর নাই ; কিন্তু ইছাপুরের মন্দির অপেক্ষ এমন্দির আরও মুনার এবং অধিকতর কারুকার্য্যযুক্ত। মন্দিরটি এখনও দওীয়মান আছে, কিন্তু উহার নয়টি রত্ব বা চুড়াই ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে। কথিত আছে, এখানে মালবরাজ বিক্রমাদিত্যের সভার মত যশোরেশ্বর বিক্রমাদিত্যের নবরত্ন সভা বসিত ; সমাজের মিলন হইত, তাহাতে সামাজিক বিধি-নিষেধ লিপিবদ্ধ হইয়া থাকিত। প্রবাদের কথা সরকারী রিপোর্টেও মানিয়া লওয়া