পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९8० যশোহর-খুলনার ইতিহাস করিয়া প্রতাপ সত্যপালন করিবার জন্ত উষ্ঠত হইলেন। মহিষীও র্তাহার সতী সাধৰী, প্রকৃত সহধৰ্ম্মিণী ; তিনি মহারাজেব মুখের পানে চাহিয়া ইঙ্গিত মাত্র ভিখারী ব্রাহ্মণের সমীপবৰ্ত্তী হইলেন । সমবেত লোক সকল অবাক হইয়া সেই কাণ্ড দেখিতেছিল। এবার ব্রাহ্মণ বড় বিপন্ন হইয়া পড়িলেন, তিনি করযোডে নিবেদন করিলেন, “মহারাজের দানশক্তি বুঝিবার জন্ত আমি এরূপ অসঙ্গত প্রার্থনা করিয়াছিলাম, মহিষী আমার কন্যাস্থানীয়, আমি পুনরায় মহারাজকে দান করিতেছি। যখন আপনি রাজা, তখন আমার দান গ্রহণ করিতেও আপনি দ্যায়তঃ ধৰ্ম্মতঃ বাধ্য।” * প্রতাপ প্রথমতঃ সে প্রস্তাবে কিছুতেই স্বীকৃত হন নাই ; শেযে সভাসদ্রবর্গের শাস্ত্রের ব্যবস্থা মত মহিষীর ভারানুরূপ অর্থ ব্রাহ্মণকে দান করিয়া মহারাণীকে পুনগ্রহণ করিলেন। অচিরে এই সকল দানের কাহিনী যশোহর রাজ্যের সর্বত্র লোক সমাজে প্রচারিত হইল। তখনই ভটিমুখে কবিতা রচিত হইয়াছিল – “স্বর্গে ইন্দ্র দেবরাজ, বাসুকি পাতালে, প্রতাপ আদিত রায় অবনীমণ্ডলে।” { এই গল্পেব কতটুকু সত্য বা অসত্য, তাহ নির্ণয় করিবার উপায় নাই। তবে এইটুকু বলা যাইতে পারে যে, এমন কবিতা অকারণে রচিত হয় না; তাহা যদি হইত, তবে দেশে অনেক খ্যাতিসম্পন্ন রাজাও আছেন, তাহদেব অনেকের নামে এমন কবিতা রচিত হইত। যতদিন এই কাহিনী প্রবাদবাক্যে রক্ষিত হইবে, ততদিন প্রতাপাদিত্যের দানের মহিমা নিম্প্রভ হইবে না। এই দান শুধু সাধারণ দান নহে, এই দানশীলতার অন্তরালে সেই বঙ্গীয় নৃপতির যে মহাপ্রাণত এবং কঠোর ধৰ্ম্মনিষ্ঠার পরিচয় পাওয়া যায়, তাহ সকলেরই লক্ষ্য করিবার বিষয় ।

  • বিশ্বকোষ, ১২শ খণ্ড, "প্রতাপাদিত্য” প্রবন্ধ (প্রচার চন্দ্র মুখোপাধ্যায়), ২৬৯পূ: রাম রাম বম্বর “প্রতাপাদিত্য” (মূলগ্রন্থ) ১২৭খৃঃ নিখিল বাবুর টিপ্পনী, ১৯৫ঞ্চ ।

{ এই কবিতাটি আগ্রা হইতে আগত জনৈক ভাটের মুখে ব্যক্ত হইয়াছে। বই মহাশয় ভাটের গল্পষ্ট। বড় বেশী অতিরঞ্জিত করিয়া ফেলিয়াছেন। হিন্দুস্থানী ভাটের পক্ষে বাঙ্গাল কবিতা রচনা সভ্য বলিয়া বোধ হয় না। বোধ হয় কোন দেশীয় ভাট বা কবি ইহা রচণা করেন এবং দtণশীলতার গল্পের সঙ্গে সৰ্ব্বত্র প্রচারিত হয়।