পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিগ্ৰহ-প্রতিষ্ঠা ২৬৩ প্রায় বিশ হাজার লোকের সমাগম হয়, রাজবাটীর সম্মুখে বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যে কয়েকদিন ধরিয়া প্রকাও মেলা বসে। বর্তমান সময়ে কাটুনিয়ার দোলোৎসবের মত বিরাট উৎসব বোধ হয় খুলনা জেলার আর কোথাও হয় না। প্রতাপদিত্যের গোবিন্দদেব দেখিতে হইলে কাটুনিয়ার রাজবাটীতেই দেখিতে হইবে। অধিকারী মহাশয়ের উক্ত ঘটনার পর, ১৩১৬ সালে পণ্ডিতবর্গের পরামর্শ লইয়া নূতন গোবিন্দদেব ও রাধিক মূৰ্ত্তি প্রস্তুত করাইয়া পূৰ্ব্ব মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন বটে, কিন্তু কাৰ্য্যক্ষেত্রে তাহারা প্রকৃত গোবিন্দদেবের কতকগুলি বৃত্তিমহলের উপস্বত্ব হইতে বঞ্চিত হইয়াছেন। অথচ কে সে উপস্বত্ব পাইবে, তাহা এখনও স্থির হয় নাই। এ সম্বন্ধে অনেক মোকদ্দমা হইয়া গিয়াছে। অনেক স্থলে প্রজারাই নিষ্কর ভোগ করিতেছে। প্রতাপাদিত্য যখন উৎকল দেশ হইতে গোবিন্দদেব বিগ্ৰহ আনয়ন করেন, তখন তৎসঙ্গে রাধিক মূৰ্ত্তি ছিল না। কথিত আছে ঐ মূৰ্ত্তি নাকি সুবর্ণরেখ নদীর মধ্যে পতিত হয় এবং বহু চেষ্টায়ও তাহার উদ্ধার সাধন হয় না। বসন্ত রায় ঐবিগ্রহ প্রতিষ্ঠার পূৰ্ব্বে নিজের পছন্দ মত পিত্তল নিৰ্ম্মিত রাধিক মূৰ্ত্তি গঠন করাইয়া লন। প্রথম গঠিত দুই একটি মূৰ্ত্তি র্তাহার মনোনীত না হওয়ায় । পরিত্যক্ত হয় ; প্রবাদ এই যে, বসন্ত রায় স্বপ্নাদিষ্ট হইয়া জানিতে পারেন, উক্ত মূৰ্ত্তি গোবিদদেবের মনঃপূত হয় নাই। তখন ঐ সকল পরিত্যক্ত মূৰ্ত্তির জন্ত নূতন কৃষ্ণমূৰ্ত্তি গঠন করাইয়া, প্রতাপাদিত্য র্তাহার রাজ্য মধ্যে নানা স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেন। ঐযুক্ত সত্যচরণ শাস্ত্রী মহাশয় লিখিয়াছেন :-"বেহাল প্রভৃতি স্থানে প্রতাপ স্থাপিত প্রতিমূৰ্ত্তি এখনও দেখিতে পাওয়া যায়। শঙ্করের নিকটও ঐ মূৰ্ত্তি ছিল, এক্ষণে উহা বারাসাতে আছে। ইহার শ্ৰীকৃষ্ণ লাবণ্যবর্তীতে নিমগ্ন হন ; এক্ষণে উক্ত রাধিক বিধবা ব্রাহ্মণী নামে অভিহিত হন।” * গোবিন্দদেব বিগ্রহের সঙ্গে প্রতাপাদিত্য যে একটি শিবলিঙ্গ অনিয়াছিলেন, উৎকল দেশ হইতে আনীত বলিয়া উহার নাম উৎকলেশ্বর শিবলিঙ্গ। এই লিঙ্গ বসন্ত রায় বেদকাণী নামক স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেন। ঐ স্থানে যে দুর্গের কথা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি, তাহার বাহিরে উত্তর দিকে কাশীর খালের পার্থে একস্থানে প্রতাপাদিত্যের জীবন-চরিত, ও8পুঃ ।