পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૧ીઝ যশোহর-খুলনার ইতিহাস করিয়া এবং দক্ষিণে উন্মুক্ত সাগরের দিক হইতে হিজলী আক্রমণ করা হইল। শুনা যায়, এই যুদ্ধ ১৮ দিন ধরিয়া চলিয়াছিল । রণতরী হইতে তীরে নামিয় দুৰ্দ্দান্ত বাঙ্গালী-সৈন্ত দিনের পর দিন ভীষণ অনল-ক্রীড়া করিয়াছিল। অবশেষে প্রতাপের জয় হইল। প্রবাদ এই, যুদ্ধ কালে ঈশাখার পায়ে এক গোলার আঘাত লাগে, সেই আঘাতেই তিনি পঞ্চস্তু পান। তাহার প্রধান সেনাপতি ও মৃত্যুমুখে পতিত হন । তখন প্রতাপ যুদ্ধ জয় করিয়া শত্রু সৈন্ত বিতাড়িত করিয়া দেন এবং কথিত আছে, তিনি ছয়মাস কাল সেখানে থাকিয়া রাজ্য রক্ষণ ও রাজস্ব-সংগ্রহের বিশেষ ব্যবস্থা করেন । হিজলী রাজ্যে পূৰ্ব্ব হইতে অনেক গুলি সামন্ত রাজা ছিলেন ; অল্পদিনে পাঠানেয় তাহাদিগকে করতলগত করিতে পারে নাই। কথিত আছে, বাসুদেবপুর ও মানা ষ্টেটের প্রথম সনন্দ প্রতাপাদিত্য কর্তৃক প্রদত্ত হয়। হিজলীর প্রাচীন ইতিহাস এখনও প্রচ্ছন্ন। উহার উদ্ধারের জন্ত আমি বহু চেষ্টা করিয়াছি। যাহা পাইয়াছি, তাহ সামান্ত এবং তাছার মধ্যে প্রতাপদিত্যের সঙ্গে কোন রাজনৈতিক সম্পর্কের স্পষ্ট প্রমাণ নাই। হিজলীতে পাঠান আমলের একটি প্রাচীন মসজিদ আছে। উহারই সন্নিকটে এক প্রাচীন মুসলমান গৃহে একখানি অতি জীর্ণ পারসীক পুথি পাওয়া যায় । কঁথির সুযোগ্য মহকুমা-মাজিষ্ট্রেট রায়সাহেব শ্ৰীযুক্ত রামপদ চট্টোপাধ্যায় মহোদয়ের চেষ্টায় উহা কিছুকালের জন্ত আমার হস্তগত হয়। উহার অতিরঞ্জিত গল্প পুঞ্জের মধ্য হইতে সংক্ষিপ্ত সার গ্রহণ করিয়া হিজলীর উৎপত্তির একটি বিবরণী পাইয়াছি। বহুমার পুত্র রহমৎ নামক এক সাহসী সর্দার ষোড়শ শতাব্দীব প্রথম ভাগে সমুদ্রকুলে হিজল-বৃক্ষ-সমাকীর্ণ এক প্রদেশে হিজলী নামক স্থান প্রতিষ্ঠা করেন। পাতশাহের সেনাপতি খা-খানানের নিকট হইতে তিনি জমিদারী সনন্দ পান এবং বহুদিন পরে পুত্র দাউদ খাঁর হস্তে জমিদারীর ভার দিয়া মৃত্যুমুখে পতি হন। দাউদের তাজ খাঁ ও সেকনার পালোয়ান নামক দুই পুত্র হয়। তাজ খাঁর অন্ত নাম এক্তিয়ার খাঁ, তিনি সিংহাসনের উপর উপবিষ্ট হন এবং সম্মানিত বলিয় তাহার মসনদ-আলি বা মসন্দরী এই সাধারণ খেতাব ছিল । ভীমসিংহ মহাপাত্র প্রভৃতি কয়েকজন কৰ্ম্মচারীর চক্রান্তে সেকন্দর মৃত্যুমুখে পতিত হন (১৫৫৪ খৃঃ অঃ) তাজ খাঁ সাধু পুরুষ,