পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানসিংহের আক্রমণ రిలిన দিনে উহাতে পয়সা ছিল এবং পৈতৃক সম্পত্তি ও পূৰ্ব্বতন আয় হইতেও ভবানন সঙ্গতিসম্পন্ন ছিলেন । বাগোয়ানে তাহার বাড়া ছিল, উহা বেশী দূরবর্তী নহে; দেশের মধ্যে তাহার প্রতিপত্তি ছিল, সে কথা পরে বলিতেছি। ভবানন্দ বিশেষ চেষ্টা করিয়া বহুসংখ্যক নৌকা সংগ্ৰহ করিয়া দিলেন। বাদশাহী সৈন্ত নিরুদ্বেগে পার হইল। কিন্তু এই সময় চৈত্রমাস ; অকস্মাং এক দৈব বিপদ ঘটিল। সৈন্ত সামন্ত পার হইয়া চাপড়ায় আসিতে না আসিতে ভীষণ ঝড় বৃষ্টি আরম্ভ হইল এবং সাতদিন ধরিয়া অবিশ্রান্ত চলিল। উচ্চাতে কত নৌকা ডুবিল, হাতী ঘোড়া ভাসিয়া গেল, সাজসরঞ্জাম ও রসদাদি নষ্ট হইল, আশ্রয়হীন সৈন্যদলের অপরিসীম কষ্ট হইল। তাহারা জোর করিয়া আশ্রয় জুটাইল, ভবানন্দও যতটুকু সাধ্য, তাহাদিগকে সাহায্য করিলেন। কিন্তু তাহাদের প্রধান অভাব হইল খাদ্যের ; সেপক্ষেও ভবানন্দ তাহাদের প্রধান ভরসাস্থল হইয়াছিলেন। তিনি নিজ গৃহে গোবিন্দদেব বিগ্রহের সহিত রাধিক প্রতিমার বিবাহ দিবার উৎসব করিবেন বলিয়া যথেষ্ট খাদ্য-সন্তার সংগ্ৰহ করিয়া রাখিয়াছিলেন । তাছাই দিয়া মানসিংহের সৈন্যদিগের উদর-তৃপ্তি করিলেন । ঝড়বৃষ্টির মধ্যেও অবিরত ভারে ভরে সেই সকল খাদ্য নৌকাযোগে আনিয়া লুটাইয় দেওয়া হইল। যে নৈবেদ্য গোবিন্দদেবের পূজায় লাগিল না, তাহাই মানসিংহের পূজায় দিয়া ভবানন্দ স্বীয় ভাগ্যলক্ষ্মীকে সুপ্রসন্ন করিলেন । মানসিংহ তাহাকে ভবিষ্যতে বহু পুরস্কার দিবেন বলিয়া কত আশ্বাস দিলেন ; এবং তাহাকে সঙ্গে লষ্টয়া যশোহরাভিমুখে যাত্রা করিলেন। সত্বরতার সহিত সৈন্ত-চালনাই জয় লাভের মূলমন্ত্র । এইবার আমরা ভবানন্দের পরিচয় দিয়া লইব । শাণ্ডিল্য গোত্রীয় ভট্টনারায়ণের অষ্টাদশ পুরুষ কাশীনাথ নদীয়ার অন্তর্গত কাকৃদি পরগণার জমিদার ছিলেন এবং বাগোন্ধানের অন্তর্গত আঞ্জুলবাড়িয়ায় তাহার নিবাস ছিল । দৈবদোষে তিনি রাজকোপে পতিত হইয়া মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাছার বিষয় বাজেয়াপ্ত হয়। তখন র্তাহার গর্ভবতী স্ত্রী নিরাশ্রয় অবস্থায় পড়িয়া জাতিমানের ভয়ে নিকটবর্তী হরেকৃষ্ণ সমাদার নামক এক বৈষয়িক ব্রাহ্মণের আশ্রয় লন । যথাকালে তিনি একটি পুত্র প্রসব করেন। হরেকৃষ্ণ নিঃসন্তান ছিলেন বলিয়া কালে ঐ পুত্রটিকে নিজেৰ উত্ত্ববাধিকারী নিৰ্ব্বাচিত করেন । পুত্রের নাম রামচন্দ্র ; তিনি লমাদারের