পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

έξύ যশোহর-খুলনার ইতিহাস ফারসীও শিথিয়াছিলেন। উহা তখনকার রাজভাষা, রাজদরবারে কোন কাৰ্য্য সিদ্ধি করিতে হইলে, ফারসী বা উর্দুতে দখল থাকা দরকার হইত। সীতাঞ্জামের তাহা ছিল। কাটোয় হইতে ভূষণায় আসিয়া বহু সম্পর্কে মুসলমানের সহিত মিলিয়া মিশিয়া তিনি উর্দুতে স্বনার ভাবে কথোপকথন করা শিখিয়া লইয়া ছিলেন। তবে সুকুমার শাস্ত্র অপেক্ষ অস্ত্রশস্ত্রের শাস্ত্রে তাহার অধিকতর দখল দাড়াইয়াছিল। লাঠি তখন বঙ্গদেশে ধন-মান-প্রাণ রক্ষার প্রধান অবলম্বন ছিল ; সে লাঠির শাস্ত্রে সীতারাম পরম পণ্ডিত ছিলেন। র্তাহার স্বাভাবিকী প্রতিভা সেই দিকে খুলিয়াছিল। ভূষণায় আসিবার পর হইতে অশ্বারোহণে এবং অস্ত্রচালনায় তিনি রীতিমত শিক্ষালাভ করিয়া ছিলেন। তিনি যখন প্রাপ্তবয়স্ক যুবক, তখন ঢাকায় রাজদরবারে আনাগণা করিতেন। গুণগ্রাহী সায়েস্তা খাঁ নানা প্রসঙ্গে তাহার অস্ত্রশিক্ষা ও সাহসিকতার পরিচয় পাইয়া তুষ্ট হইয়াছিলেন। শুনিতে পাওয়া যায়, ভূষণার নিকটে সা-তৈর পরগণায় করিম খাঁ নামক একজন পাঠান বীর বিদ্রোহী হইলে যখন ফৌজদারও তাহার দমনের জন্ত সৈন্ত পাঠাইয়া কয়েকবার বিফল মনোরথ হইলেন, তখন সায়েস্তা খাঁ সে সংবাদ পাইয়া কাছাকে পাঠাইবেন ভাবিতেছিলেন। সীতারাম তখন স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়৷ এই দুঃসাহসিক কার্য্যে যাইবার জন্ত আগ্রহ জানাইলেন। প্রতিভার পথ সহজে উন্মুক্ত হয়। নবাব তাহার প্রস্তাবে সম্মত হইলেন এবং কয়েক সহস্র পদাতিক ও অশ্বারোহী সৈন্ত দিয়া তাহাকেই এই দুরূহ কার্য্যে পাঠাইলেন। ইহাই তাহার জীবনের প্রথম পরীক্ষা ; ভাগ্যগুণে সীতারাম এ পরীক্ষায় সগৌরবে উত্তীর্ণ হইলেন। করিম খাঁ পরাজিত ও নিহত হইল ; যুদ্ধ-বিজয়ী সীতারাম ঢাকায় গিয়া নবাবের নিকট প্রশংসা ও অনুগ্রহ লাভ করিলেন। দম্নাদুর্বত্তের দমনের জন্ত নবাব তাহাকে ভূষণার অন্তর্গত নলী পরগণা জায়গীর দিলেন। শুধু যে পাঠানের শেষ বার মাথা তুলিবার চেষ্টা করিতে গিয়া স্থানে স্থানে বিদ্ৰোহ-বহ্নি প্রজ্জ্বলিত করিতেছিল, তাহা নহে ; দস্তু-দুৰ্বত্ত ও চোর ডাকাইভের উৎপাতে তপন যশোহর-খুলনার লোক ৰিপন্ন হইয়া পড়িয়াছিল। মগের অত্যাচার তখনও ছিল ; এমন কি, দক্ষিণদিকের মুন্দরবন বা নিকটবৰ্ত্তী স্থানের ত কথাই নাই, উত্তৰ দিকেও তাছারা মধুমতী প্রভৃতি নদীপথে প্রবেশ করিয়া যেখানে