পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পত্র

পারবে না; নয়, তাঁদের সকলের মত এই যে, বালকের কাছ থেকেও জ্ঞান শিক্ষা করা যায়— কিন্তু সে মতের চারাগাছটি তাঁদের মাথায় সবে জন্মেছে মাত্র, তার ডালপালা হৃদয় পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছতে পারে নি। তাঁদের মত বটে যে, সকলকে সমভাবে দর্শন করা উচিত; কিন্তু সমভাবে দর্শন করা তাঁদের পক্ষে অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। তাঁদের মত যতক্ষণ কার্যক্ষেত্রে না নাবে ততক্ষণ ‘তাঁরা সকলের প্রতি সমান ব্যবহার করতে পারবেন’ এই কল্পনার উপর বিশ্বাস করে দশ জনকে সমবেত করলেন; কিন্তু যেই তাঁরা তাঁদের সঙ্গে সমান ব্যবহার করতে আরম্ভ করলেন অমনি দেখলেন তাঁদের বুকের ভিতরে লাগে। আমার বোধ হয়, ইংরাজ মেম্বরদের সঙ্গে আইরিশ মেম্বরদের এই রকম সম্পর্ক। পার্ল্যামেণ্টের কথা তবে আজ এই পর্যন্ত থাক্‌।

পঞ্চম পত্র

প্রাণীবৃত্তান্তের সূচিপত্রে ইঙ্গবঙ্গ-নামক এক অদ্ভুত নতুন জীবের উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়—তাদের ক’টা ক্ষুর ক’ পাটি দাঁত ও সিংহচর্ম তাদের গায়ে ঢিলে হয় কি কষা হয় তার বিস্তারিত বিবরণ -সমেত একটা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ লেখবার বাসনা আছে, সকলে অবধান করো। ‘এই বেড়াল বনে গেলেই বনবেড়াল হয়।’ তোমাদের সেই বন্ধু, যে ‘হংসমধ্যে বকো যথা’ হয়ে তোমাদের মধ্যে থাকত, যার বুদ্ধির অভাব দেখে তোমরা অত্যন্ত ভাবিত ছিলে, ইস্কুলের মাস্টাররা যাকে পিটিয়ে পিটিয়ে ঘোড়া করবার আশা একেবারে পরিত্যাগ করেছিলেন, সেই যখন এ বন থেকে ফিরে যাবে তখন তার ফুলোনো লেজ, বাঁকানো ঘাড়, নখালো থাবা

৪৯